দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তুমুলভাবে বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে সৌদি আরবকে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বিভিন্ন ইস্যুতে সৌদি আরবকে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এই বৈঠক হয়েছে। সেখানে সৌদি আরবের প্রতিনিধিদল চরমভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছে। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ (সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড) এবং ইয়েমেন যুদ্ধের কারণে মূলত সৌদি প্রতিনিধিদলকে কঠোর নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরব আন্তর্জাতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে।
জানা গেছে, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রতি চার বছর পর পর ‘ইউনিভারসাল পেরিয়ডিক রিভিউ’ নামে মানবাধিকার পরিস্থিতির রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে। এই বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক। এবারের বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলও বলেছে যে, সাংবাদিক জামাল খাশোগির পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছেন তারা।
মার্কিন প্রতিনিধিদল বলেছে যে, ‘হত্যার রহস্য প্রকাশের পূর্বে পুঙ্খানুপুঙ্খ, পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা জরুরি।’
আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সমর্থন করে এলেও গত সপ্তাহে ইয়েমেনে বিমান হামলা বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
অপরদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য চ্যাপ্টারের পরিচালক সামা হাদিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, ‘ইয়েমেনে সৌদি আরবের আরও মানবাধিকার লঙ্ঘন যাতে না হয় সেজন্য জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর উচিত তাদের সমস্ত নীরবতা ভেঙে সৌদি আরবের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে দায়িত্ব পালন করা।’
সামা হাদিদ আরও বলেছেন, সৌদি সরকার দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক জামাল খাশোগির মতো সমালোচকদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে ও বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে তা জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো ইচ্ছাকৃতভাবেই উপেক্ষা করে আসছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের বৈঠকে সৌদি প্রতিনিধিদল জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে যে, রিয়াদ এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করছে ও দোষীদেরকে শাস্তির আওতায় আনবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সৌদি প্রতিনিধিদলে এই সময় নেতৃত্ব দেন দেশটির মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বান্দার আল-আইবান।
উল্লেখ্য, শুধু ইয়েমেন নয়, বিশেষ করে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগীকে তুরস্কের ইস্তাবুলে সৌদি কনস্যুলেটে আটকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ বিকৃত করে তা গায়েব করে দেওয়ায় সারা বিশ্বে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে সকলেই। সৌদি আরবের চরমতম মিত্র হিসেবে খ্যাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এখন সৌদি আরবের এহেন কর্মকাণ্ডে নাখোশ।