দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ১ জুলাই হতে চালু হওয়ার কথা অত্যাধুনিক ই-পাসপোর্ট। জুনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে ১ জুলাই থেকেই নাগরিকদের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দেওয়ার কাজ চলছে।
তবে এই ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না বলে জানিয়েছে পাসপোর্ট অধিদফতর।
জানা গেছে, পৃথিবীর ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে। এবার ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই রকম বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা রয়েছে, সেটি ই-পাসপোর্টে থাকবে না। সেখানে থাকবে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে ছাড়পত্র পেলে ১ জুলাই থেকেই ই-পাসপোর্ট বিতরণ শুরু হবে।
পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটা পেজে যেসব তথ্য রয়েছে, সেগুলো ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। এই ই-পাসপোর্টের মেয়াদ বয়স অনুপাতে ৫ ও ১০ বছর হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে নতুন করে কাওকেই আর এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে তখন তাদেরকে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেওয়া হবে।জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে দ্রুততম সময়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারপর প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিআইপি) তৈরি হতে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করেছে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদফতর।
জানা যায়, বর্তমান এমআরপি ব্যবস্থা হতে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় উত্তরণ ঘটলে বাংলাদেশিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঝামেলাবিহীনভাবে ভ্রমণ করতে সক্ষম হবেন। কারণ ই-পাসপোর্ট এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিদ্যমান বইয়ের সঙ্গে একটি ডিজিটাল পাতা (ডাটা পেজ) জুড়ে দেওয়া হবে।
ওই ডিজিটাল পাতাটিতে উন্নতমানের মেশিন রিডেবল চিপ বসানো থাকবে। এতেই সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য। ডাটা পেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর ৩ ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ। ভ্রমণকালীন সময় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কম্পিউটারের মাধ্যমে খুব দ্রুততম সময়ে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবেন।
এই ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ঝামেলাহীনভাবে ই-গেট ব্যবহার করে দ্রুততম সময়েই ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে যে ধরনের এমআরপি বই দেওয়া হচ্ছে সেগুলোও জাল করা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এই ধরনের কয়েকটি জাল এমআরপি ধরা পড়ে। বিদ্যমান এমআরপিতে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাল করা সম্ভব হচ্ছে। তবে ই-পাসপোর্ট বইয়ের পলিকার্বোনেট ডেটা পেজ জাল করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। তাছাড়া ই-পাসপোর্টে থাকছে ৪২টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যও।