দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার বিভিন্ন ধরণের খাদ্যের ক্যান্সার অণুজীব সনাক্ত করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে একটি মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশন। ড্রিমল্যাব নামের এই অ্যাপ্লিকেশনটি এ পর্যন্ত ৮৩ হাজারেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
গবেষণার এক তথ্যে জানা গেছে, গাজর, আখরোট ও কমলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করা অণুজীব বিদ্যমান রয়েছে।
মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা যখন ঘুমিয়ে থাকেন, অর্থাৎ মোবাইল ফোনটি যখন অলস পড়ে থাকে তখনই এই অ্যাপটি কাজ করে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, চিকিৎসার উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বকে আরও ‘দীর্ঘ পথ’ পাড়ি দিতে হবে। অ্যাপটি একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিদিন ৮ হাজারেরও বেশি খাদ্যকনা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে। তার ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয় বিশদ তথ্য সম্বলিত ডাটাবেস। মূলত এর মাধ্যমে সেই অণুজীবগুলোকেই খোঁজা হয় যেগুলো বিভিন্ন ল্যাব পরীক্ষায় ক্যান্সার দমনে সফল প্রমাণিত হয়।
আঙ্গুর, ধনেপাতা ও বাঁধাকপিতে এই ক্যান্সার বিরোধী অণুজীবের সংখ্যা অনেক বেশি পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে প্রচলিত অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল ওষুধ ক্যান্সার নির্মূল থেরাপিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অস্ত্রোপচার ও ক্যান্সার বিভাগের প্রধান গবেষক ড. কিরিল ভেসেলকভ এই বিষয়ে বলেচেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলা যায়। পরবর্তী ধাপে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা হবে বিভিন্ন ওষুধের সমন্বয় এবং খাদ্য-ভিত্তিক অণুজীবগুলো মানুষের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে থাকে।’
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে-এর স্বাস্থ্য তথ্য কর্মকর্তা উইলিন উ বলেছেন যে, এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা হয়তো নতুন ক্যান্সার থেরাপি খুঁজে বের করতে কিংবা এর পথ পেতে সক্ষম হবো। মূলত যেই থেরাপি আমাদের খাদ্য ও পানীয়তে প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে।
‘ক্যান্সারের চিকিৎসায় এই পদ্ধতিটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। সেখানে এটা দেখা প্রয়োজন যে এটি ক্যান্সারের চিকিৎসায় আদৌ কার্যকর কিছু কি না।’
‘ক্যান্সার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য কোনও একটি বিশেষ ধরনের খাদ্য খাওয়ার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাস।’
‘এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আপনি আঁশযুক্ত খাবার বিশেষ করে ফল ও সবজি বেশি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম হবেন। সেইসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত মাংস, লাল মাংস ও উচ্চ ক্যালরি-যুক্ত খাবার বাপানীয় খাওয়ার হার কমিয়ে আনাটাও আপনার জন্য অত্যান্ত জরুরি একটি বিষয়।’
বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে, এই অ্যাপ্লিকেশনটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ভোডাফোন ফাউন্ডেশনের মধ্যে একটি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে নেচার পত্রিকায়।