দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিবিসি টেলিভিশনে বাংলাদেশী বংশদ্ভুত নাদিয়া হুসেইন রান্না প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে প্রথম হয়ে বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেন। সেই নাদিয়া এবার কোটিপতি হয়েছেন রান্নার বই লিখে!
বিবিসি টিভিতে রান্নার প্রতিযোগিতায় সাফল্যের পর আর তিনি থেমে থাকেননি। ব্রিটেনের রানির ঘরেও তার তৈরি কেক যেতো। বিভিন্ন রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠানে তার পরামর্শ ও উপস্থিতি ছিল সত্যিই লোভনীয়। তারপর বই লিখে এবং বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে সরব উপস্থিতি দিয়ে নাদিয়া বনে গেলেন কোটিপতি।
নাদিয়ার কাছে রান্না সংস্কৃতি ও এক শৈল্পিক বিষয়। রীতিমতো পড়াশুনা ও চর্চা করে নাদিয়া নতুন নতুন খাবার তৈরি করেন। অথচ শুরুতে গ্যাস বিল বাঁচাতে তাকে অনেক কসরতও করতে হয়েছে। ৩৪ বছর বয়সী নাদিয়ার ১০টি রান্নার বই বর্তমানে ব্রিটেন ছাড়াও নানা দেশে হট কেকের মতোই বিক্রি হয়ে থাকে। ‘বেক অব উইনার’ হিসেবে নাদিয়ার এসব বই সেরা পাচকদের কাছেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক পাঁচ তারকা হোটেলেও তার রন্ধন প্রক্রিয়া গুরুত্বের সঙ্গেই গ্রহণ করা হয়। রান্না নিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেন। তাছাড়া মানুষ তার কাছে আসেন নতুন নতুন আইটেম কিভাবে বানাতে হবে তা শিখতে।
বর্তমানে নাদিয়া জে হুসেইন লি: ব্রিটেনে রান্নার এক সেনা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সালের কথা রান্না করে নাদিয়ার প্রতিষ্ঠান আয় করেছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার পাউন্ড, তারপর তা কখন যে ৩ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড ছাড়িয়ে গেছে তা মনে হয় নাদিয়াও বুঝতে পাননি। গত ২ বছরে নাদিয়া আয়কর দিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড। একই সময়ে তার আয় ছাড়িয়ে গেছে ১০ লাখ পাউন্ড!
নাদিয়ার রান্না খুব সহজে অন্যরাও রপ্ত করতে পারেন। বিবিসি টু’তে নাদিয়ার ব্রিটিশ ফুড এ্যাডভেঞ্চার, নাদিয়া’র ফ্যামিলি ফেবারিটস এবং টাইম টু ইট হুইচ দেখার জন্য মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে।
নাদিয়া তিন সন্তানের জননী। নাদিয়া তার রান্না শুরুর বিষয়ে বলেন, ৭ অথবা ৮ বছর বয়সে আমি আলু খেতে চেয়ে রান্নার চেষ্টা করেছি। সে প্রচেষ্টা আজও অব্দি অব্যাহত রয়েছে। সেই থেকে এখন অবধি কানায় কানায় নানা বৈচিত্রে পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়েছে। অথচ স্কুল জীবনে মাত্র ১১ বছর বয়সে তাকে অনেক বর্ণবাদি আচরণও সহ্র করতে হয়েছিলো নাদিয়াকে। এমনকি রান্নার পাশাপাশি কিভাবে বর্ণবাদি আচরণ মোকাবেলা করতে হয় সেটি নিয়েও ‘নাদিয়া: দুশ্চিন্তা এবং আমি’ নামে টিভি অনুষ্ঠান করছেন নাদিয়া। এভাবেই তিনি এগিয়ে চলেছেন শুধুই সামনের দিকে।