দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাতি আজ শ্রদ্ধাভরে ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৫তম বার্ষিকী পালন করছে। দেড় দশক আগে আজকের এইদিনে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় ২৫ জন নিহত হন।
তখন বিএনপি-জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন ছিল। মূলত আওয়ামীলকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চার দলীয় জোট সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নৃশংসতম এই গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলো।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতাও সেদিন অল্পের জন্য এই ভয়াবহ হামলায় বেঁচে গেলেও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আইভি রহমান এবং আরও ২৪ জন নিহত হন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচিও গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে দলের নেতা কর্মীরা সকাল ৯ টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদীতে পুস্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। বিকেল ৪টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বক্তব্য রাখবেন দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী এবং জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
এই হামলায় আরও ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই আবার চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেও কেও আর স্বাভাবিক জীবন ফিরেই পাননি। দেশের বৃহৎ এই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূণ্য করতে এই নৃশংস হামলা করা হয়েছিল।
ওইদিন শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আকস্মিকভাবে গ্রেনেড বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে মারাত্মক বিশৃংখলা, ভয়াবহ মৃত্যু ও দিনের আলো মুছে গিয়ে এক ধোয়াচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো।
ঢাকা’র তৎকালিন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাৎক্ষণিকভাবে এক মানব বলয় তৈরি করে নিজেরা আঘাত সহ্য করে শেখ হাসিনাকে এই বয়াবহ গ্রেনেডের হাত হতে রক্ষা করেন।
মেয়র হানিফের মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত অস্ত্রোপাচারের কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্পিন্টার শরীরে থাকার কারণে তার সেই অস্ত্রোপাচার করা সম্ভব হয়নি। পরে মেয়র হানিফ ব্যাংকক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিকে শেখ হাসিনা গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও তাঁর শ্রবণ শক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়।
ওই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় উল্লেখযোগ্য নিহতরা হলো, আইভি রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব:) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন সরদার, রেজিনা বেগম, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্ঝেম, বেলাল হোসেন, রতন শিকদার, মামুন মৃধা, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা). মোশতাক আহমেদ সেন্টু, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ হানিফ, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।
মারাত্মকভাবে যারা আহত হন তারা হলেন শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, প্রায়ত আব্দুর রাজ্জাক, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, এডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওলাদ হোসেন, নজরুল ইসলাম বাবু, সাঈদ খোকন, মাহবুবা পারভীন, এডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দিপ্তী, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, রুমা ইসলাম, মামুন মল্লিক প্রমুখ।