বিশ্বের বড় ভাসমান গ্রাম সম্পর্কে জানুন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক রকম গ্রামের কথা আমরা শুনেছি। তবে আজকে রয়েছে ব্যতিক্রমি একটি গ্রামের গল্প। আর সেটি হলো বিশ্বের বড় ভাসমান গ্রাম।

ভাসমান শহর বলতে গেলে ভেনিস-এর কথাই সকলের মনে উঠে আসবে। তবে যদি বলা হয় যে ভাসমান গ্রাম কোনটি? ঠিক তাই, ভাসমান শহরের মতো রয়েছে ভাসমান গ্রামও। তবে এই গ্রামটি অবশ্য ইতালিতে নয়। এই গ্রামটি অবস্থিত ব্রুনেইয়ে। এই গ্রামটিকে ডাকা হয়ে থাকে ক্যাম্পং আয়ের নামে। ক্যাম্পং আয়ের-এর অর্থই হলো ভাসমান গ্রাম।

প্রায় এক হাজার বছর পূর্বে বাজাউ উপজাতিরা ব্রুনেই নদীর উপর নিজেদের বসতি গড়ে তোলেন। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার বিস্তারও ঘটে। পরবর্তীতে এটি একটি আদর্শ গ্রামে রূপান্তরিত হয়। এই গ্রামে প্রতিটি ঘরেই রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ, স্বচ্ছ পানীয়জলের ব্যবস্থাসহ রয়েছে ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা।

এখানে পানিপথে এক গ্রাম হতে আর এক গ্রামে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে স্পিডবোট। তাছাড়াও গ্রামটিতে রয়েছে থানা, ফায়ার ব্রিগেডের মতো জরুরি পরিষেবাও। গ্রামের কোথাও আগুন লাগলে কিংবা কোথাও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটলে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য স্পিডবোট ব্যবহার করে পুলিশ ও দমকলবাহিনী। গ্রামটিতে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, পেট্রোল পাম্প, রেস্তোরাঁ, চিকিৎসাকেন্দ্র।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, প্রায় ৫শ’ বছর পূর্বে পর্তুগিজ ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান ভেনেজুয়েলার পণ্ডিত অ্যান্টোনিও পিগাফেটা এখানে নাকি ঘুরতে এসেছিলেন। ১৫২১ খ্রীষ্টাব্দে ব্রুনাইয়ে যাত্রা করেছিলেন তিনি। তখন তিনি অ্যান্টোনিয়া এবং আশেপাশের গ্রামের মধ্যে সাদৃশ্য দেখতে পান।

প্রাচীন ব্যবসায়ীদের তৈরি নথি অনুযায়ী জানা যায়, হাজার বছরেরও পূর্বে বাজাউ সি নোম্যাডস ব্রুনাই নদীর উপরে ঘর নির্মাণ করেন। সেই থেকেই ধীরে ধীরে এই গ্রামে এমনিভাবে বসতি গড়ে ওঠে।

ভাসমান গ্রামটির একমাত্র বন্দর হলো সেরি বেগওয়ানে। একটি বিশাল ৩৮ কিলোমিটার কাঠ ও কংক্রিটের দ্বারা তৈরি সাঁকো আশেপাশের গ্রামগুলির একমাত্র সংযোগকারী মাধ্যম। এটিকেই ধরা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান গ্রাম হিসেবে।

এই গ্রামে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই হলো মৎস্যজীবী। এই গ্রামে সরকারি আবাসন, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, থানা সবই রয়েছে এই ভাসমান গ্রামের মধ্যে। নৌকাই হলো এই গ্রামের প্রধান যানবাহন। তবে গ্রাম বললেও এখানে আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে সর্বত্রই। বিশ্বের বৃহত্তম ভাসমান এই গ্রামকে ‘পূর্বের ভেনিস’ নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।