দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতি নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তে সক্ষম এক ধরনের মাস্ক তৈরি করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। এই মাস্কই শনাক্ত করবে করোনা ভাইরাস!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, অভিনব এই মাস্কে করোনা পজিটিভ ব্যক্তির নিঃশ্বাস, হাঁসি বা কাশি নিঃসৃত হলেই তাতে নভেল করোনার উপস্থিতি রয়েছে কিনা তা শনাক্ত করা যাবে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির (এমআইটি) বিজ্ঞানীরা যে মাস্কটি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন, এতে করোনা পজিটিভ ব্যক্তির শ্বাস, কাশি বা হাঁচি নিঃসৃত হলেই ফ্লুরোসেন্ট সিগন্যাল তৈরি হয়ে তা আলোকিত হয়ে উঠবে। এতে করে শনাক্ত হবে যে, মাস্ক ব্যবহারকারী ব্যক্তিটি করোনায় সংক্রমিত।
জিকা ও ইবোলার হুমকি সমাধানে গবেষণা করে সফল হওয়ায় এই বিজ্ঞানী দল করোনা শনাক্তে আগের সরঞ্জামের সঙ্গে নতুন এই প্রযুক্তি তৈরি করতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। এটি সফল হলে করোনা শনাক্তে স্ক্রিনিংসহ তাপমাত্রা পরীক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত ত্রুটি খুব সহজেই সমাধান করা সম্ভব হবে।
গবেষণা দলের সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সিনথেটিক জীববিজ্ঞানী এবং এমআইটির অধ্যাপক ড. জিম কলিন্স এই বিষয়ে বলেছেন যে, ‘আমরা যখন আবারও আমাদের এই ট্রানজিট সিস্টেমটি চালু করবো এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা তল্লাশি গেটের মধ্য দিয়ে যাবে, টিক তখন এই প্রযুক্তি দারুণভাবেই কাজে লাগবে বলে আমরা মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘যে কেও তার কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পূর্বে বা পরে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনা শনাক্ত করতে সক্ষম হবে। হাসপাতালে অপেক্ষমাণ রোগীদের মধ্যে কে কে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে, তার প্রাক-নিরীক্ষাতেও এটি ব্যবহার করা সম্ভব হবে।’
জীববিজ্ঞানী কলিন্স এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, তার দল এর আগেও এমন একটি সেন্সর তৈরি করেছে, যা ভাইরাস উপস্থিত হওয়ার পর হলুদ হতে বেগুনিতে পরিবর্তিত হয়। তাই এবারও তিনি রং পরিবর্তনকারী সেন্সর তৈরির সম্ভাবনাকেও একেবারে উড়িয়ে দেননি।
জানা যায় যে, করোনা শানাক্তে মাস্ক আলোকিত হওয়া প্রকল্পটি বর্তমানে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এর ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক। কয়েক সপ্তাহ ধরে দলটি লালার নমুনায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে সেন্সরগুলোর দক্ষতা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, তাতেও তারা সফল হয়েছেন।
এই নতুন প্রযুক্তি পরবর্তী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাস্তবে ধরা দেবে এবং জনগণের ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রখ্যাত সিনথেটিক জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জিম কলিন্স।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।