দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরির নাম হচ্ছে ‘ইউনাইটেড লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’। ১৮০০ সালের ২৪ এপ্রিল আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, লাইব্রেরিটি প্রথম যাত্রা শুরু করে ৬ হাজার ৪৮৭টি বই নিয়ে। বর্তমানে এই লাইব্রেরিতে ১৬ মিলিয়ন বই এবং ১২০ মিলিয়ন অন্যান্য তথ্যাদি সংগৃহীত রয়েছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এতে ৫৪০ মাইল দীর্ঘ সেলফ রয়েছে যাতে ৯০ মিলিয়ন বই কিংবা অন্যান্য জিনিসপত্র রাখা যাবে।
এই লাইব্রেরিতে রয়েছে বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকা, ছবি, হাতে লেখা বই, মানচিত্রসহ অবাক করার মতো অনেক কিছু। ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা এই লাইব্রেরিতে আক্রমণ করে এবং তারা লাইব্রেরির ৩ হাজার মূল্যবান বই পুড়িয়ে দেয়। ১৮১৫ সালের সাবেক প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন ২৯ হাজার ৯৫০ ডলার খরচ করে লাইব্রেরিটির সংস্কার করেন। কিন্তু ১৮৫১ সালে লাইব্রেরিতে আবার আগুন ধরে। এতে লাইব্রেরির দুই তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পুড়ে যায় লাইব্রেরির প্রায় ৩৫ হাজার ভলিউম বই। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর লাইব্রেরিতে যুক্ত করা হয় ৮২ হাজার ভলিউম বই।
এখানে রয়েছে চীন, জাপান, রাশিয়ায়সহ বিভিন্ন দেশের বই। বইগুলো অধিকাংশ বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, বিভিন্ন দেশের আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রচিত। এখানে রয়েছে হস্তলিখিত বইয়ের বিরাট সংগ্রহশালা। ১৮৬৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন লাইব্রেরিটি আরও প্রসার করেন। একই সাথে এটিকে দেখাশোনা করার জন্য লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দেন। লাইব্রেরির সংগ্রহশালা সংরক্ষণের জন্য ওই সময় কপিরাইট আইন চালু করা হয়। লাইব্রেরির জন্য নির্মাণ করা হয় স্থায়ী ভবন। নতুন রুম, গ্যালারি, সেলফসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের সংযোজনে লাইব্রেরিটি একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করে। এরপর ১৯৩৯ সালে এখানে জন অ্যাডম নামে আরও একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯৮০ সালে মোট ৩টি ভবন নিয়ে গড়ে ওঠে লাইব্রেরিটি। লাইব্রেরির ভবণ নির্মাণ কাজে ৪০ জন পেইন্টার এবং ভাস্কর্য নিয়োজিত ছিলেন। লাইব্রেরির স্থপতি হলেন পেয়ারসন এবং ইউলসন। লাইব্রেরি পরিচালনার খরচে টাকা জোগাড় করতে ট্রাস্টি ফান্ড গঠন করা হয়। এরপর আমেরিকার অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই ফান্ডে টাকা জমা দেয়া শুরু করেন। অনেকই দেন বিভিন্ন বই এবং পত্র-পত্রিকা।
এভাবে ধীরে ধীরে লাইব্রেরির সংগ্রহ বাড়তে থাকে। এখনও লাইব্রেরিটি বিশ্বের সবচয়ে বড় লাইব্রেরির স্থান দখল করে রেখেছে। কখনও আপনি যদি যান তাহলে এই লাইব্রেরিতে ঢু মারতে ভুলবেন না।