দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে এ বছর যেসব বিশাল জনগোষ্ঠী অতি দরিদ্র হয়ে পড়বে, আগামী বছরও সেই চরমতম দারিদ্র্যতা ঘুচবে না।
গত মঙ্গলবার এই সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। তবে আগামী বছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলেও মনে করছে সংস্থাটি।
বিশ্ব ব্যাংক গত সোমবার ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ প্রকাশ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এক বিশ্লেষণে মঙ্গলবার সংস্থাটি বলেছে যে, করোনা মহামারির কারণে এই বছর ৭ হতে ১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার হয়ে পড়বেস। করোনার কারণেই গত ৮০ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে পুরো বিশ্ব।
মহামারির পূর্বে বিশ্বব্যাংকের ‘চরম দারিদ্র্য’ বলতে ওই মানুষকে বলা হতো, যিনি প্রতিদিন ১ দশমিক ৯০ ডলারের (১৬১ টাকা) চেয়ে কম অর্থে জীবনযাপন করে থাকেন। এখন তা আরও কমিয়ে আনা হয়েছে।
তবে আগামী বছর অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছে বিশ্ব ব্যাংক। সংস্থাটি বলছে যে, আগামী বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ হতে পারে। তবে যেসব দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবথেকে বেশি, তাদের প্রবৃদ্ধি জনসংখ্যার অনুপাতে অতোটা বাড়বে না । এতে ২০২০ সালে যারা চরম দরিদ্র হয়ে পড়েছেন, ২০২১ সাল পর্যন্ত তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে যে, বিশ্বের মোট দারিদ্রের এক-তৃতীয়াংশের বেশি বাস করে ভারত, নাইজেরিয়া এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে। এই দেশগুলোর মাথাপিছু মোট জাতীয় উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হবে ভারত ২ দশমিক ১, নাইজেরিয়া মাইনাস শূন্য দশমিক ৮ এবং কঙ্গো শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। অপরদিকে এই দেশগুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হলো যথাক্রমে ১ শতাংশ, ২ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৩ দশমিক ১ শতাংশ। দরিদ্রের সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে এই হার যথেষ্ট নয়।
বিশ্ব ব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, করোনা মহামারির কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি বাড়বে দক্ষিণ এশিয়াতে, বিশেষ করে ওই অঞ্চলের ভারতে। বিশ্বব্যাপী ১৭ কোটি ৬০ লাখ মানুষের দৈনিক আয় ৩ দশমিক ২০ ডলারেরও (২৭১ টাকা) নিচে নেমে আসবে। এই সাড়ে ১৭ কোটির দুই-তৃতীয়াংশই হবে এশিয়ার মানুষ।
গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাসে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে যে, এই বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হয়ে যাবে। উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাথাপিছু আয় আরও কমবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।