দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাড়িতে কিংবা বাইরে কেওই করোনা ভাইরাস হতে সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত নন। একটি নতুন গবেষণা উঠে এসেছে কতো সহজে এবং দ্রুত এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে গবেষকরা এক গবেষণা করে এমন সব তথ্য দিয়েছেন। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, গবেষকরা এমন জায়গা কিংবা পৃষ্ঠের কথা জানিয়েছেন, যা আমরা সাধারণ দৈনন্দিন রুটিনে ব্যবহার করে থাকি। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেসব পৃষ্ঠগুলি কোনটি যা এই গবেষণাতে সবচেয়ে সংক্রামক বলে মনে করা হয়।
গণপরিবহনের জানালা
ট্রেন ও বাসের মতো গণপরিবহন পরিষেবা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সমীক্ষায় বলা হচ্ছে যে, এই গণপরিবহনের জানালা ও হাতল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া রডগুলিকে সবচেয়ে সংক্রামক বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এগুলি ইস্পাত কিংবা কাচের মতো উপকরণ দিয়ে তৈরি। যে কারণে এতে সহজেই ভাইরাস আটকে থাকে। অনেক যাত্রীই এগুলি ব্যবহার করে থাকেন, যার ফলে তা আরও সংক্রামক হয়ে ওঠে।
টাকার নোট
ওই সমীক্ষা বলছে যে, করোনা ভাইরাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ২০ দিনের জন্য টাকার নোটে থাকতে পারে। তাই টাকার লেনদেনের মাধ্যমে ভাইরাস একটি নোট হতে অন্য নোটে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। এই সময় যতোটা সম্ভব নোট ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। বা কখনও টাকা ধরলেও স্যানিটাইজ করে নিতে হবে সঙ্গে সঙ্গে।
ফোনের স্ক্রিন
ফোন আমাদের জীবনের একটি অতি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। আমরা যেখানেই যাই না কেনো ফোন নিয়ে যাই। এমনকি কিছু লোক ফোন ওয়াশরুমেও নিয়ে যান। ভাইরাস খুব সহজেই ফোনের স্ক্রিনে আটকে যায়। আমাদের আঙুল বেশিরভাগ সময় ফোনের স্ক্রিনেই থাকে। তাই ফোনের স্ক্রিন হতে ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেক বেশি। তাছাড়া করোনার কারণে বাইরে থেকেও ফোনের স্ক্রিনে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে।
এটিএম বুথের সুইচ
এটিএম বুথের বোতাম এবং স্ক্রিনে সহজেই আসতে পারে ভাইরাস। প্রত্যেকে টাকা তুলতে এটিএম বুথের বোতাম ও স্ক্রিন স্পর্শ করে। যে কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এই সময় এটিএম হতে অর্থ উত্তোলনের পরিবর্তে অনলাইন লেনদেন করায় ভালো। নেহায়েত এটিএম বুথ যদি ব্যবহার করতে হয় তাহলে বুথ ব্যবহারের পর হাত ভালো করে স্যানিটাইজ করে নেওয়াও ভালো।
স্টেইনলেস স্টিল
সমীক্ষা অনুসারে দেখা যায়, ভাইরাসটি বেশি তাপে দীর্ঘস্থায়ী হয় না, তবে স্টেইনলেস স্টিলের উপর এটি কয়েক ঘন্টার জন্য খুব সহজেই থাকতে পারে। রান্নাঘরে ব্যবহৃত বেশিরভাগ পাত্র স্টিলের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।