দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে সর্বত্রই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের দুর্নামে মুখর। সে মুখরতার পেছনে কারণ আছে বৈকি। তবে সম্প্রতি এমন এক চমৎকার আবিষ্কার করেছেন নেদারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা যাতে এই অসময়ে সুনামের মুখ দেখতে পারে গ্যাসটি। নেদারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্য একটি উপায় বের করেছেন। ‘এনভায়রন্মেন্টাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি লেটার’ নামের একটি বিজ্ঞান বিষয়ক তাত্ত্বিক পত্রিকায় তারা তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন।
নেদারল্যান্ডের ওয়েটসাস নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। ওয়েটসাস গবেষণা কেন্দ্রটি মূলত পানি বিষয়ক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য বিখ্যাত। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ওপর চালিত এই গবেষণায় বিজ্ঞাণীরা প্রথমে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তরলে রূপান্তরিত করেছেন, তারপর অন্যান্য কিছু তরল রাসায়নিকের সঙ্গে মিশিয়ে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মকে বিশ্লেষিত করে ফেলেছেন কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে। তড়িৎ বিশ্লেষণের জন্যে মিশ্রণের দুই প্রান্তে দুটি পৃথক ঝিল্লি দাঁড় করানো থাকে যারা ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আয়ণকে আকর্ষণ করে। আর প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়ার পর দুটি ঝিল্লির দিকে ইলেক্ট্রনের যেই প্রবাহ তা সংগ্রহ করে ‘ভলিয়া’ নামের একটি ইলেক্ট্রড।
প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা যায় এই প্রক্রিয়ায় যতটুকু বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যুৎ প্রক্রিয়ায় খরচ হয়। কিন্তু গবেষদলের প্রধান বার্ট হ্যামেলারস এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, ‘প্রক্রিয়াটি আরো ব্যবহার-বান্ধব করে তোলা সম্ভব।’ ‘এনভায়রন্মেন্টাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি লেটার’ পত্রিকাটির প্রকাশক সংগঠন ‘আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’ এরই মধ্যে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি ‘আবর্জনা থেকে গুপ্তধন’ বের করে আনবার মতো বিষ্ময়কর আবিষ্কার। কারণ প্রতি বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশে যায়। এই কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে যদি আলাদা করে সংগ্রহ করে রাখা যায়, তবে তা আবারো বিদ্যুতের যোগান দিতে পারে। তবে এই প্রক্রিয়া সরাসরি বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমিয়ে দেবে এমনটা নয়। এটি মূলত মানুষকে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছেড়ে দেয়ার চাইতে জমিয়ে রাখতেই উৎসাহিত করবে। ফলে বাতাসে গ্রীন হাউজ গ্যাস জমা হওয়ার হার কিছুটা কমবে।
তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান এক্সপ্রেস