দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্যারিসসহ দেশটির ৮টি শহরে নতুন করে করোনা কারফিউ জারি করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে।
এক টিভি বিবৃতিতে মাঁক্রো জানিয়েছেন, আগামী চার সপ্তাহ এই নিয়মটি জারি থাকবে। তবে দেশটির সরকার চাইছে আরও দুই সপ্তাহ বাড়াতে।
শুধু ফ্রান্সই নয়, গোটা ইউরোপেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। যার কারণে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং স্পেনসহ একাধিক দেশ আবার করোনা প্রতিরোধে কড়া অবস্থান নেওয়া শুরু করেছে। জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলও নতুন নিয়মের বিষয়টি ঘোষণা করেছেন।
এই বিষয়ে ম্যার্কেল জানিয়েছেন, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণের পরিমাণ অনেক বেশি, সেখানে বার ও রেস্তোরাঁগুলোও বেশি রাত পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে না।
গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাপক আকারে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে যে কারণে এপ্রিলের পরে এই প্রথম এক দিনে এতো পরিমাণ সংক্রমণের ঘটনা ঘটলো। তার পরেই ম্যার্কেল কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তিনি জানিয়েছেন, নতুন নিয়ম খুব দ্রুত শুরু হবে জার্মানিতে।
এদিকে করোনা সংক্রমণের নতুন ঝুঁকিতে জার্মানির মিউনিখ শহর। বার্লিনেও হঠাৎ করেই বেড়েছে সংক্রমণ। তাই রাতে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। শহরটিতে ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো কারফিউ জারি করা হলো।
রাত ১১টার মধ্যে দোকানপাটসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত অক্টোবরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ৫ জনের বেশি মানুষ রাত ১১টার পর ঘরের বাইরে একসঙ্গে বের হতে পারবে না।
তিনি জানিয়েছেন যে, যেসব স্থানে এক লাখের মধ্যে ৫০ জন কিংবা তার বেশি মানুষের সংক্রমণ ঘটবে, সেখানে রাত ১১টার মধ্যে রেস্তোরাঁ ও বার বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু তাই নয় এক জায়গায় ১০ জনের বেশি জড়োও হতে পারবেন না।
আবার বাড়িতেও ১০ জনের বেশি মানুষকে ডাকা যাবে না কিংবা জমায়েত করা যাবে না। নেদারল্যান্ডসেও কাফে, বার ও রেস্তোরাঁর উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার স্পেনের ক্যাটালোনিয়া অঞ্চলে ১৫ দিনের জন্য বার- রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চেক রিপাবলিকেও নতুন করে আবার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ইউরোপের মধ্যে চেক রিপাবলিকেই এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার সব থেকে বেশি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।