দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি কিংবা পারস্পরিক লেনদেন সুবিধা চালু হলো।
২৭ অক্টোবর হতে চালু হয়েছে এই সেবাটি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সংক্রান্ত এক নির্দেশনাও দিয়েছে। যে কারণে এখন থেকে বিকাশ, রকেট, এম ক্যাশ এবং ইউক্যাশের মতো এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যেও লেনদেন করতে পারবে।
শুধু তাই নয়, যে কোনো মোবাইল ব্যাংক হতে যে কোনো মূল ব্যাংকের সঙ্গেও লেনদেন করা যাবে। পারস্পরিক লেনদেন চালুর সঙ্গে এই সেবার মাশুলও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। তবে গ্রাহক পর্যায়ে এখনই নতুন করে কোনো মাশুল চাপছে না। তবে টাকা উত্তোলনের খরচ থাকছে ঠিক আগের মতোই।
এই বিষয়ে সকল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে যে, সফলভাবে পাইলট টেস্টিং সম্পন্নকারী ব্যাংক এবং এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার হতে ইন্টার-অপারেবিলিটি বা পারস্পরিক (লাইভ) লেনদেন সুবিধা চালু হয়েছে।
যে সব ব্যাংক বা এমএফএস এখনও ইন্টার-অপারেবিলিটি সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি, তাদের আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পারস্পরিক লেনদেনের সুবিধা চালু করতে হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে এক ব্যাংক হতে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়। তবে এক এমএফএস হতে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যেতো না। অর্থাৎ বিকাশ গ্রাহকরা নগদে কিংবা রকেটে, নগদ গ্রাহকরা বিকাশ বা রকেটে, রকেট গ্রাহকরা বিকাশ বা নগদে এতোদিন টাকা পাঠাতে পারতেন না। এখন থেকে তা পাঠাতে পারবেন।
সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে নতুন সেবাটি চালু করা হয়েছে। অবশ্য বিকাশ, রকেট ও নগদ ইতিমধ্যে নিজেরাই ব্যাংক হতে টাকা গ্রহণের সুবিধাটি চালু করেছে। বিকাশ হতে বেসরকারি সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানো যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে যে, এক এমএফএস প্রোভাইডারের হিসাব থেকে অন্য এমএফএস প্রোভাইডারের (পি-টু-পি) হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রাপক এমএফএস প্রোভাইডার প্রেরক এমএফএস প্রোভাইডারকে সাকুল্যে তাদের লেনদেন করা অর্থের শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ ফি দেবে।
এছাড়াও ব্যাংক হিসাব হতে এমএফএস হিসাবে ও এমএফএস হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর, উভয় ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রোভাইডার সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সাকুল্যে লেনদেনকৃত অর্থের শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ দিবে।
পারস্পরিক লেনদেনের জন্য অংশগ্রহণকারী ব্যাংক এবং এমএফএস গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যমান লেনদেন ফির অতিরিক্ত কোনও মাশুল তারা নিতে পারবে না। পারস্পরিক ব্যবস্থায় লেনদেনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/এমএফএস হিসাবের প্রকরণ অনুসারেই নির্ধারিত লেনদেন সীমা প্রযোজ্য হবে।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে এমএফএস প্রতিষ্ঠানের উপর মানুষের নির্ভরশীলতা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। বর্তমানে ঘরে বসেই খুব সহজেই এসব সেবার হিসাব খোলা যাচ্ছে। টাকাও আনা যাচ্ছে ব্যাংক হিসাব হতে। কেনাকাটা, পরিষেবা বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে ঘরে বসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, গত আগস্ট শেষে এমএফএসের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ২৯ লাখে, এজেন্ট ১০ লাখে ছাড়িয়েছে। আগস্ট মাসে লেনদেন হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। আগস্ট মাসে এমএফএসের মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা প্রবাসী আয়ও বিতরণ হয়েছে, আবার বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অপরদিকে কেনাকাটা হয়েছে ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা। গ্যাস-বিদ্যুতের মতো পরিষেবা বিলও পরিশোধ হয়েছে ৯০৮ কোটি টাকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।