দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যেই ষষ্ঠ হতে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়ন আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তা শেষও করা হবে। শিক্ষার্থীদের এক সপ্তাহ পর পর অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করে সেটি জমা দিতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীরা নিকটতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ এবং জমা দিতে পারবেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্ধারিত সময় অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়বস্তু জানিয়েও দেবে।
গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এই নির্দেশনাটি প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, যেহেতু করোনার সংক্রমণ রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যক্ষ পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে পাঠদান ও স্কুল পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইন পাঠদান এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে বিগত করোনাকালিন সময় হতে।
আবার শিক্ষকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠদান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। এরকম নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কতোটুকু শিখেছে তা মূল্যায়ন করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। তবে এই মূল্যায়ন যেনো তাদের ওপর মানসিক এবং শারীরিক কোনো চাপ সৃষ্টি না করে।
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা যেনো তাদের পাঠ অগ্রগতি এবং দুর্বলতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারেন, সেজন্যই সার্বিক দিক বিবেচনা করে ৮টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো:
১। এনসিটিবি কর্তৃক নির্ধারিত মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য ৩০ কর্ম দিবসের সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে। এই সিলেবাস www.dshe.gov.bd ওয়েবসাইটে যথাসময়ে প্রকাশও করা হবে।
২। এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় নির্ধারিত সিলেবাস হতে অ্যাসাইনমেন্টের (নির্ধারিত কাজ) জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণও করেছে। বিষয়বস্তু অনুযায়ী প্রণীত অ্যাসাইনমেন্ট মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে প্রতি সপ্তাহেই পাঠানো হবে।
৩। অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া এবং জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান শ্রেণী ভিত্তিক কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্ট দেবেন এবং নেবেন।
৪। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্ট ব্যতিত মূল্যায়ন সংক্রান্ত অন্য কো’নো কার্যক্রম (পরীক্ষা, হোমওয়ার্ক ইত্যাদি) গ্রহণ করতে পারবে না।
৫। অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করবেন ও পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপও নেবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা শিক্ষকদের মূল্যায়নসহ অ্যাসাইনমেন্টগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন।
৬। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীরা নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ এবং জমা দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী তার নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
৭। এই কার্যক্রম ১ নভেম্বর শুরু হবে।
৮। এইসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সব আঞ্চলিক উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমন্বয় করবেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।