দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কিডনি বিকল বা রেনাল বিকল শরীরের এক নীরব ঘাতক, প্রায় প্রতিটি পরিবারেরই কেও না কেও এই ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই আজ জেনে নিন কিডনি ভালো রাখার কয়েকটি উপায়।
আমরা সকলেই কমবেশি জানি কিডনি রোগের ভোগান্তি কতোটা নির্মম। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই এই রোগ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
আসুন জেনে নেই কিভাবে খুব সহজেই আপনার কিডনিকে সুস্থ্য রাখা সম্ভব:
কর্মঠ থাকতে হবে
নিয়মিত হাটা, দৌড়ানো, স্লাইকিং করা কিংবা সাঁতার কাটার মতো হাল্কা ব্যায়াম করে আপনার শরীরকে কর্মঠ এবং সতেজ রাখুন। কর্মঠ এবং সতেজ শরীরে অন্যান্য যেকোন রোগ হবার মতো কিডনি রোগও হবার ঝুকি খুবই কম থাকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৫০ জনই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি নষ্ট হবার ঝুকি আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, নিয়মিত আপনার রক্তের সুগার পরীক্ষা করে দেখুন তা স্বাভাবিক মাত্রায় রয়েছে কিনা, না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শুধু তাই নয়, অন্তত ৩ মাস পরপর হলেও একবার আপনার কিডনি পরীক্ষা করিয়ে জেনে নিন সেটি আদতেও সুস্থ্য রয়েছে কিনা।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
অনেকেই ধারণা করেন যে, উচ্চ রক্তচাপ শুধু ব্রেইন স্ট্রোক ও হার্ট এটাকের ক্ষেত্রে এর ঝুকি বাড়ায়। তাদের অবশ্যই জেনে রাখা ভালো যে কিডনি বিকল হওয়ার প্রধান কারণই হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই আপনাকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোনো কারণে তা ১২৯/৮৯ মি.মি. এর বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।নিয়মিত অসুধ সেবন ও তদসংক্রান্ত উপদেশ মেনে চললে খুব সহজেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
পরিমিত আহার ও ওজন নিয়ন্ত্রণ
অতিরিক্ত ওজন কিডনির জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ, তাই সুস্থ্য থাকতে হলে আপনাকে ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে।পরিমিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যেতে পারে। অপরদিকে হোটেলের তেল-মশলা যুক্ত খাবার, ফাষ্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে রোগ হওয়ার ঝুকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়। মানুষের দৈনিক মাত্র এক চা চামচ লবণ খাবার প্রয়োজন রয়েছে -খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়াও কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই খাবারে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করুন।
ধুমপান পরিহার করুন
অধুমপায়ীদের তুলনায় ধুমপায়ীদের কিডনি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ গুণ বেশি থাকে। শুধুমাত্র তাই নয়, ধুমপানের কারণে কিডনিতে রক্তপ্রবাহও কমে যেতে থাকে এবং যে কারণে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে শুরু করে দিতে পারে। এভাবে ধুমপায়ী একসময় কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন।
অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন
আমাদের মধ্যে অনেকেরই বাতিক রয়েছে প্রয়োজন/অপ্রয়োজনে দোকান থেকে হুট করে ওষুধ কিনে খান। এদের মধ্যে ব্যথার ওষুধ রয়েছে শীর্ষ তালিকায়। জেনে রাখা ভালো যে প্রায় সব ওষুধই কিডনির জন্য কমবেশি ক্ষতিকর এবং এর মধ্যে ব্যথার ওষুধ সবার চেয়ে এগিয়ে। নিয়ম না জেনে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ খেয়ে আপনি হয়তো মনের অজান্তেই আপনার কিডনিকে ধ্বংস করে যাচ্ছেন। তাই যে কোনো ওষুধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে সেটি আপনার ক্ষতি করবে কিনা।
নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা
আমাদের মধ্যে কেও কেও রয়েছেন যাদের কিডনি রোগ হওয়ার ঝুকি অনেক বেশি। তাদের অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো দরকার। কারও যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে, আর ওজন বেশি থাকে, পরিবারের কেও কিডনি রোগে আক্রান্ত থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে তার কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি অনেক বেশি। তাই এসব কারণ থাকলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করাতে হবে।
একবার কিডনি বিকল হয়ে গেলে সেটি আর ভালো হয়ে যাবার কোনো সুযোগ নেই, কেবলমাত্র ডায়ালাইসিস বা প্রতিস্থাপন করে শুধু জীবনকে দীর্ঘায়িত করা সম্ভব। তাই এই রোগ এড়িয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াটাই হবে প্রতিটি সুস্থ্য মানুষের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। তাই সময় থাকতে কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে যা যা করণীয় তাই করুন। ভবিষ্যত বিপদের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।
তথ্যসূত্র: deshebideshe.com
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।