দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের সুপারস্টার আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা মেজবাহউদ্দীন আহমেদ ওয়াসিম আর নেই। তিনি গতরাতে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)।
তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন। নায়িকা কবরীর মৃত্যুর শোক না কাটতেই ওয়াসিমের চলে যাওয়া বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে এদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনকে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
বার্ধক্যজনিত কারণে চিত্রনায়ক ওয়াসিম গত কয়েকদিন ধরেই বাসায় শয্যাশায়ী ছিলেন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চেয়েছিলেন তার পরিবার। তবে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি তার গুরুতর অসুস্থ হওয়ার খবর জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা জায়েদ খান। তিনি লেখেন যে, ‘রাজকীয় ছবি মানে ওয়াসিম ভাই। অনেক ছবিই সুপারহিট দিয়েছেন তিনি। কিছুদিন ধরে তিনি অনেক অসুস্থ, হাঁটতেও পারছেন না। বিছানাতে শুয়েই কাটছে তার সময়। সবার কাছেই দোয়া চাচ্ছি ওয়াসিম ভাইয়ের জন্য।’
আশির দশকে বাণিজ্যিক-অ্যাকশনের পাশাপাশি ফোক-ফ্যান্টাসি সিনেমার এক নম্বর আসনটি দখলে ছিল অভিনেতা ওয়াসিমের। ১৯৭২ সালে ঢাকাই চলচ্চিত্রে ওয়াসিমের অভিষেক হয় সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’র মাধ্যমে। তারপর নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তারপর দিন যতোই গড়াতে থাকে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা ততোই যেনো আকাশচুম্বী হয়। এক সময় বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমায় অপরিহার্য নায়ক হয়ে উঠেন তিনি।
শাবানা, ববিতা, কবরী, অলিভিয়া, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষ, অঞ্জনা, নূতন- ওই সময়ের এসব অভিনেত্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ওয়াসিম।
মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথম নায়ক হিসেবে রূপালী পর্দায় আবির্ভাব ঘটে নায়ক ওয়াসিমের। সেই সিনেমাটি ব্যবসাসফল হয়। তারপর ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ সিনেমা তাকে আরও পরিচিতি এনে দেয়।
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন ওয়াসিম। ফোক ফ্যান্টাসি ও অ্যাকশন ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা ছিলেন নায়ক ওয়াসিম। তখন এ্যাকশান মানেই নায়ক ওয়াসিম। তার ছবি দেখার জন্য বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলো যেনো উপচে পড়া ভিড় দেখা যেতো। তার প্রতিটি ছবিই ছিলো যেনো হিট।
ওয়াসিম অভিনয় জীবনে ১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো ছিলো- ‘দ্য রেইন’, ‘ডাকু মনসুর’, ‘জিঘাংসা’, ‘কে আসল কে নকল’, ‘বাহাদুর’, ‘মানসী’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘দুই রাজকুমার’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘ইমান’, ‘রাতের পর দিন’, ‘মিস লোলিতা’, ‘আসামি হাজির’, ‘রাজ দুলারী’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘লাল মেম সাহেব’, ‘লুটেরা’, ‘বেদ্বীন’, ‘জীবন সাথী’, ‘রাজনন্দিনী’, ‘রাজমহল’, ‘বিনি সুতার মালা’, ‘বানজারান’ অন্যতম।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।