দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে প্রদত্ত তাঁর বাংলায় ভাষণে কোভিড-মুক্ত বিশ্ব গড়তে সার্বজনীন ও সাশ্রয়ী মুল্যে টিকা প্রাপ্যতায় যথাযথ বৈশ্বিক পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
তিনি হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, বর্তমান ‘টিকা-বিভাজন’ প্রবণতা কেবলমাত্র মহামারীটিকেই দীর্ঘস্থায়ী করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-মুক্ত বিশ্বের জন্য, আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী সকল মানুষের জন্য সার্বজনীন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল (শুক্রবার) বাংলাদেশ সময় রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দেওয়া ১৭তম বাংলা ভাষণে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকা বৈষম্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এ যাবত উৎপাদিত টিকার ৮৪ শতাংশ উচ্চ এবং উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মানুষের কাছে পৌঁছেছে। অপরদিকে, নিন্ম আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশেরও কম এই টিকা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জরুরিভিত্তিতে এই টিকা বৈষম্য দূর করতে হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে টিকা থেকে দূরে রেখে কখনই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না। তাছাড়া আমরা পুরোপুরি নিরাপদও থাকতে পারবো না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অবিলম্বে টিকা প্রযুক্তি হস্তান্তর টিকার সমতা নিশ্চিত করার একটি উপায়ও হতে পারে। প্রযুক্তি সহায়তা এবং মেধাস্বত্ত্বে ছাড় পেলে বাংলাদেশও বিপুল পরিমাণে টিকা তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সময়কে এক ‘ক্রান্তিলগ্ন’ উল্লেখ করে জাতিসংঘকে ‘ভরসার সর্বোত্তম কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে উল্লেখ করে এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, আসুন সেই ভরসাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়ে আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে একযোগে কাজ করে যায়। বহুপাক্ষিকতাবাদ এবং জাতিসংঘ ব্যবস্থার দৃঢ় সমর্থক হিসেবে বাংলাদেশ এই সঙ্কটকালে জাতিসংঘকে আশা ও আকাক্সক্ষার প্রতীক হিসেবেই দেখে। সব ধরণের মতভেদ ভুলে গিয়ে আমাদের অবশ্যই ‘অভিন্ন মানবজাতি’ হিসেবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে, সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সবার জন্য আবারও এক সমৃদ্ধশালী বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে।
করোনা মহামারী করোনা মোকাবেলার পাশপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট ৬ দফা প্রস্তাবও উত্থাপন করেন তিনি। ফিলিস্তিন ও আফগান সমস্যাও তাঁর আলোচনায় উঠে এসেছে। এই সময় তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে পুনরায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জোরালো ভূমিকা এবং অব্যাহত সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।