দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে শিশুদের সব ধরনের মৌসুমি ফল খাওয়ানোর জন্য।
শীতের আমেজ পড়তে শুরু হওয়া মানেই রোগ জীবাণুও মাথাচাড়া দিয়ে উঠা। শরতের শেষ ও হেমন্তের শুরুতে হীমও পড়তে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এই সময় কখনও গরম, আবার কখনও ভোরের দিকে হঠাৎ ঠাণ্ডার অনুভূতিতে সাধারণ সর্দি, কাশি, ভাইরাল জ্বর হতে দেখা যায়। সংক্রমণের নিরিখে করোনা এখন একটু পিছিয়ে পড়লেও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুসহ ভাইরাসজনিত নানা প্রকোপ। এসব রোগের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে শিশুর শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলাটা জরুরি।
চিকিৎসকরা মনে করেন, মৌসুমি সব্জি ও ফল স্বাভাবিকভাবেই শিশুদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এই বয়সে খাবারে পুষ্টিগুণ শোষণ করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশিই থাকে। তাই ওষুধই নয়, খাবারের উপরই ভরসা করতে পারেন অনেকটা।
এ জন্য প্রতিদিন কোন কোন খাবার খাওয়াবেন?
মিষ্টি আলু
বাড়ির সব তরকারিতে একটা জিনিস থাকবে হবে আর তা হলো মিষ্টি আলু। তবে বাচ্চাদের খাবারে এই সাধারণ আলুর পরিবর্তে রাঙা আলু কিংবা মিষ্টি আলু ব্যবহার করলে সেই খাবারের পুষ্টিগুণ অনেকটাই বেড়ে যাবে। মিষ্টি আলুতে থাকা পটাশিয়াম, ভিটামিন, ফাইবার শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
গুড়
বাচ্চাদের মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা একটু বেশিই থাকে। চকোলেট, কৃত্রিম চিনি দেওয়া যে কোনও খাবারই শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এর পরিবর্তে খাবারে গুড় ব্যবহার করতে পারেন। ভিটামিন বি১২, বি৬, ফোলেট, ক্যালশিয়াম, আয়রণ ও বিভিন্ন খনিজ সমৃদ্ধ গুড় শিশুদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আমলকি
ঋতু পরিবর্তনের কারণে যে সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি-কাশির মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে, তার হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে ছোট থেকেই আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর আমলকি শুধু সর্দি-কাশিই নয়, শিশুদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা থাকলেও তা নির্মূল হবে।
খেঁজুর
সাধারণত শৈশব থেকে কৈশোরে পা রাখার সময়টাতে হরমোনের তারতম্যও ঘটে। যে কারণে শারীরিক নানা রকম সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে আপনার সন্তানকে। এই সব সমস্যা দূর করতে হলে ছোট থেকেই খেঁজুর খাওয়াতে পারেন। খেঁজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
ভিটামিন সি জাতীয় ফল খাওয়ান
চিকিৎসকরা যদিও শিশুদের সব ধরনের মৌসুমি ফল খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবুও তার মধ্যে প্রতিদিন সাইট্রাস জাতীয় ফল যেনো থাকেই। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য ভিটামিন সি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে কোনও ধরনের লেবুতেই যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। তাছাড়াও স্ট্রবেরি, আঙুর, কিউয়িতেও ভিটামিন সি পেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।