দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যেখানে জনসমাগম বেশি ঘটে, সেখানে রোগের আনাগোনাও বেশি থাকায় স্বাভাবিক। সাধারণ জিমে অনেক মানুষের যাতায়াত। আর তাই এক শরীর থেকে অন্য শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে প্রবল।
যেখানে জনসমাগম বেশি ঘটে, সেখানে রোগের আনাগোনাও বেশি থাকায় স্বাভাবিক। সাধারণ জিমে অনেক মানুষের যাতায়াত। আর তাই এক শরীর থেকে অন্য শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে প্রবল। এছাড়াও জিমের কিংবা সেখানকার যন্ত্রপাতির পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলেও রোগের বাড়বাড়ন্ত আরও বেশি হতে পারে।
ইম্পেটিগো
ইম্পেটিগো হলো ত্বকের এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়াঘটিত সংক্রমণ। এটি ত্বকের ছোট্ট জায়গায় প্রথমে লালচে দাগ হয়। এরপর সেখান থেকে সেটি সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ সাধারণত এক জনের থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
রিংওয়ার্ম
রিংওয়ার্ম কোনও এক জনের দেহ হতে এই ছত্রাকজনিত সংক্রমণ অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ত্বক লালও হয়ে যেতে পারে। জ্বালা-পোড়াও করতে পারে।
ফলিকিউলিটিস
সাধারণত ত্বকের উপর ব্রণের মতো ব্যাক্টেরিয়াজনিত এক প্রকার সংক্রমণ হয়- সেটিতেই বলা হয় ফলিকিউলিটিস। এটি চুলকালে তা শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ফলিকিউলিটিস নির্মূল করা কিছু ক্ষেত্রে বেশ মুশকিল হয়ে পড়ে। দাগও থেকে যেতে পারে সারাজীবন।
ইনফ্লুয়েঞ্জা
ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগটি ভীষণ ছোঁয়াচে। জিমে একসঙ্গে অনেকেই শরীরচর্চা করেন। যে কারণে কার শরীরে কী রোগ রয়েছে, তা বোঝা যায় না। ঘাম, হাঁচি, কাশি কিংবা শ্বাসের মাধ্যমে দ্রুত এক জনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগটি।
অ্যাথলিট্স ফুট
নিয়মিত যারা জিমে যান, তারা এই অ্যাথলিট্স ফুট রোগের সঙ্গে খুবই পরিচিত। এই ছত্রাকঘটিত রোগ হলে পায়ের তলায় জ্বালার অনুভূতি হতে থাকে। আর তখন বার বার পায়ে হাত দিলে, পা থেকে সংক্রমণ হাতের মাধ্যমে দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এইসব রোগ হতে আপনাকে সাবধান হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org