দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কেবলমাত্র শীতকালেই নয়, বর্ষাতেও জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু পানীয় রয়েছে, যেগুলো ভিতর থেকে শরীরও উষ্ণ রাখে। এই মৌসুমে যদি তেমন কোনো পানীয় খাওয়া যায়, তাতে বেশ উপকার পাবেন।
বর্ষাকালে সর্দি-কাশির সমস্যা থাকে সেটিই স্বাভাবিক। কোনো কারণে একটু ভিজলেই হাঁচি, কাশি শুরু হয়। সেই সঙ্গে দেখা যায় জ্বর, গলাব্যথা। এছাড়াও বর্ষার আবহাওয়া এমন স্যাঁতসেঁতে হয় যে, খুব সহজেই এই সমস্যাগুলো বাসা বাঁধে শরীরের মধ্যে। জ্বর হলে একটা ওষুধ খেলে সেরে যায় এটি ঠিক। তবে শরীর ভিতর থেকে বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়াও সুস্থ হওয়ার পর যে আবার অসুখ হবে না, তার কোনও নিশ্চয়তাও থাকে না। তাই আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। কিছু পানীয় রয়েছে, যেগুলো মূলত ভিতর থেকে শরীর উষ্ণ রাখে। এই মৌসুমে যদি তেমন কিছু পানীয় খাওয়া যায়, তাহলে আপনি বেশ উপকার পাবেন।
জোয়ান হলুদ মিশ্রিত দুধ
এই বর্ষায় সুস্থ থাকতে জোয়ান মেশানো হলুদ দুধও খেতে পারেন। এই পানীয় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। সংক্রমণের ঝুঁকিও তখন কমায়। এছাড়াও, দুধের ক্যালশিয়াম সর্দি-কাশি থেকে আরও দূরে রাখে। রাতে হলদি দুধ খেয়ে ঘুমোতে যান। দুধে জোয়ান মিশিয়ে নিলে আরও বেশি উপকার পাবেন। গ্যাসের সমস্যাও দূরে থাকবে আপনার থেকে।
মধু ও আদা দেওয়া লেবুর রং চা
বৃষ্টির এ মৌসুমে লেবু চায়ে চুমুক দিলে বেশ উপকার পাবেন। তবে শুধুমাত্র মনই নয়, শরীরও ভালো হয়ে যাবে যদি চায়ে মধু ও আদা কুচি সেইসঙ্গ যোগ করতে পারেন। আদার গুণে দূরে থাকবে সর্দি ও জ্বর। লেবুতে থাকা অ্যাসিড সংক্রমণের ঝুঁকিও কমাবে।
ব্ল্যাক কফির সঙ্গে দারচিনি খান
অনেকেই দুধ কফির বদলে কালো কফি পছন্দ করেন। এই বর্ষায় চনমনে ও চাঙ্গা রাখতে কালো কফি উপকারী। কফিতে চিনির বদলে দারচিনি ব্যবহার করতে পারেন। অন্য রকম এক স্বাদ তো পাবেনই, সেইসঙ্গে শরীরও থাকবে যত্নে। আবার আশঙ্কা কমবে সংক্রমণের। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org