দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্লকোমা থেকে একেবারে নিস্তার পাওয়া কখনও সম্ভব নয়। তবে যাতে আরও ক্ষতি না হয়ে যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। কী লক্ষণ দেখে সতর্ক আপনাকে হতে হবে?
গ্লকোমা হলো দৃষ্টিশক্তি হারানোর অন্যতম কারণ। যে কোনও বয়সেই এই রোগটি হানা দিতে পারে চোখে। চিকিৎসকরা এই রোগকে অনেক সময় ‘সাইলেন্ট থিফ’ও বলে থাকেন। চোখের মধ্যে যে অংশ দিয়ে সাধারণ তরল চলাচল করে, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে তা জমে চোখের উপর বাড়তি চাপ ফেলে দেয়- বিশেষ করে অপটিক স্নায়ুতে। সেই চাপ বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তিও কমতে শুরু করে। পরবর্তী সময় এই সমস্যা থেকে বাড়ে অন্ধত্বের ঝুঁকিও। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিটা শুরু হয় চোখের পরিধির চারপাশ থেকেই, তাই গ্লকোমায় আক্রান্ত রোগীদের ‘সাইড ভিশন’ও নষ্ট হতে থাকে। চোখের ভিতর পানি তৈরি হতে থাকে, অথচ এই পানি বেরোনোর জায়গা পায় না- যে কারণে তা দুর্বল জায়গাগুলোতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। সেই থেকেই সমস্যা বাড়ে।
এই গ্লকোমা হলো দৃষ্টিশক্তি হারানোর অন্যতম কারণ। যে কোনও বয়সেই এই রোগ চোখে হানা দিতে পারে। চিকিৎসকরা এই রোগকে ‘সাইলেন্ট থিফ’ও বলে থাকেন। সাধারণ চোখের মধ্যে যে অংশ দিয়ে তরল চলাচল করে থাকে, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলেই তা জমে চোখের উপর বাড়তি চাপ ফেলে দেয়- বিশেষ করে অপটিক স্নায়ুতে। সেই চাপ বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে দেয়। পরবর্তী সময় এই সমস্যা থেকেই বাড়ে অন্ধত্বের ঝুঁকিও।
গ্লকোমার মতো অসুখ সম্পূর্ণ নিরাময় কখনও সম্ভব নয়। এই সমস্যা ধরা পড়ার পর চিকিৎসা শুরু হলেও ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা থেকে যায়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে এই রোগের সঙ্গে যুঝে ওঠা সম্ভব হয়।
কাদের গ্লকামার ঝুঁকি অনেক বেশি?
# কারও ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে গ্লকোমার সম্ভাবনা তখন বাড়তে পারে।
# যারা নিয়মিতভাবে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান, তাদেরও গ্লকোমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
# বিশেষ করে যারা ইনহেলার ব্যবহার করেন, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
# চিকিৎসক এক বার পাওয়ার সেট করে দেওয়ার পরে সাধারণত এক-দেড় বছরের মধ্যে তা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তবে যদি মাস কয়েকের মধ্যেই বার বার পাওয়ার বেড়ে যায়, তা গ্লকোমায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণও হতে পারে।
# কোনো সময় চোখে গুরুতর চোট-আঘাত লাগলে, পরবর্তীকালে সেখান থেকেও গ্লকোমা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গ্লকোমা থেকে একেবারেই নিস্তার পাওয়া সম্ভব নয়, তবে যাতে আরও ক্ষতি না হয়ে যায়, সে ব্যবস্থা করা সম্ভব। সঠিক সময় ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে অসুখের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সেজন্য দরকার সতর্কতা। তাই সমস্যা থাকলে তো বটেই, না থাকলেও বছরে অন্তত এক বার চক্ষু পরীক্ষা করানো দরকার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org