দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জ্বরের সংক্রমণ সেরে গেলেও হাতে-পায়ে ব্যথা, ঝিঁঝি ধরা, অবশ হয়ে আসছে প্রায় সময়। কারও কারও আবার মুখের এক পাশও পক্ষাঘাতে অবশ হয়ে যেতে দেখা যায়। কী কারণে এমনটি হতে পারে?
বর্তমান সময়ে আবহাওয়ার পরিবর্তন কিংবা বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর, সর্দি, চোখে সংক্রমণ প্রায় ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে তা সেরে গেলেও অদ্ভুত এক স্নায়ু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, করোনা অতিমারির পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘জিবিএস’ বা গিলান-বারে সিনড্রোমের খবর আসছে। হাতে-পায়ে ব্যথা অনুভব, ঝিঁঝি ধরা, অবশ হয়ে আসা বা পক্ষাঘাত- এই রোগের লক্ষণ। কারও কারও আবার মুখের এক পাশও পক্ষাঘাতে অবশ হয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যায় অনেক সময়। ইদানীং এই সংক্রমণজনিত জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর অনেকেই আবার এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলেও সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছেন বহু চিকিৎসক। হাভার্ড হেল্থ বলছে যে, স্নায়ুর এই জটিল রোগ গিলান-বারে সিন্ড্রোমের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাই নেই। তবে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা ও ফিজিয়োথেরাপি- এই রোগের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগলেও এটি মোটেও মারণব্যধি নয়। তবে ব্যক্তিবিশেষে তা আবার মারাত্মক আকার ধারণও করতে পারে।
বুঝবেন কীভাবে?
# হাত-পায়ের আঙুল বা পাতায় ঝিঁঝি ধরা, পিন ফোটার মতো অনুভূতি হওয়া, তা সব সময় অবশ্য সাধারণ কোনও কারণে নাও হতে পারে।
# পায়ের পাতা অবশ হতে হতে ক্রমশ দেহের উপরের দিকও অনেক সময় অসাড় হয়ে যায়, যে কারণে হাঁটাচলা করতে বেশ অসুবিধা হতে পারে।
# মুখের এক দিক ক্রমশ অসাড় হয়ে যাওয়ার কারণে কথা বলতে, খেতে সমস্যা হতে পারে অনেকেরই। এই রোগে আক্রান্ত হলে চোখের মণি স্থির হয়ে যেতে পারে অনেক সময়।
# এই সময় যেহেতু শরীরে কোনও সাড় থাকে না, তাই মলমূত্র ত্যাগ করতেও সমস্যা হয় অনেকের।
# অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, রক্তের চাপ কমে যাওয়া কিংবা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org