দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি শারীরিক পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে এবং প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসেও খানিকটা বদল আনতে হবে।
সাধারণত অপুষ্টিজনিত কারণে যে রোগগুলো শরীরে বাসা বাঁধে, তারমধ্যে রক্তাল্পতা অন্যতম। অপুষ্টি ও রক্তাল্পতার অন্যতম কারণ হলেও একমাত্র নয়। আয়রণের অভাবেও এই রোগ হতে পারে। এছাড়াও, শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষত থেকে হওয়া রক্তক্ষরণের কারণেও শরীরে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তাল্পতার কারণে ক্লান্তি বেড়ে যায়। শরীর অনেক দুর্বল লাগে। রক্তাল্পতার সমস্যায় পরিস্থিতি যদি খুব জটিল হয়েই যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না। শারীরিক পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে থাকেই, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসেও খানিকটা বদল আনতে হবে। তাহলে কোন খাবারগুলো রক্তে আয়রণ ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে সেটি আজ জেনে নিন।
ফল
সাধারণ অনেক খাবারেই আয়রণ থাকে। তবে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি না থাকলে সেই আয়রণ শরীর ঠিক মতো শোষণও করতে পারে না। আম, লেবু, আপেল, পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি। এই ভিটামিন শরীরে আয়রণ শোষণ করতে সাহায্য করে।
শাকসব্জি
শাকসব্জি খেলে শরীরে আয়রণের ঘাটতি অনেকটা কমে। বিট হিমোগ্লোবিনের পরিমাণও বাড়াতে সাহায্য করে। টোম্যাটো, ব্রোকোলি, কুমড়ো বা পালং শাকেও প্রচুর আয়রণ থেকে। নিয়মিত যদি এই সব্জিগুলো খেতে পারেন, তাহলে রক্তাল্পতার সমস্যা কমে যেতে পারে।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেট হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি কমানোর মোক্ষম দাওয়াই হতে পারে। মিল্ক চকোলেট বা শর্করার পরিমাণ বেশি, এমন চকোলেট বেশি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর ডার্ক চকোলেটে সেই ঝুঁকি নেই। বরং এটি খেলে শরীরে আয়রণের ঘাটতি কমে যাবে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে আয়রণে সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট বেশি করে খেতে হবে।
ড্রাই ফ্রুটস
হিমোগ্লোবিন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কিশমিশ, কাজু বাদাম, খেজুরের মতো ড্রাই ফ্রুটস বেশি করে খেতে হবে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রণ থাকে। অ্যাপ্রিকটেও প্রচুর পরিমাণে আয়রণ রয়েছে। হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি কমাতে এইগুলো খেলে আপনিও উপকার পাবেন।
সামুদ্রিক মাছ
আমরা অনেকেই জানি সামুদ্রিক মাছে আয়রণ বেশি পরিমাণে থাকে। তবে সামুদ্রিক মাছ যে খুব বেশি পাওয়া যায়, তা কিন্তু নয়। চিংড়ি, পমফ্রেটের মতো কিছু সামুদ্রিক মাছে ভালো মাত্রায় আয়রণ থাকে। রক্তাল্পতায় যারা ভুগছেন, তারা এই মাছগুলো নিয়ম করে খেতে পারেন- তাতে বেশ উপকার পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org