দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টানা চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করলে পিঠে ব্যথা হতে পারে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যোগের কোন বিকল্প নেই। সঠিক আসনে একাধিক শারীরিক সমস্যাও সুরাহা হতে পারে।
১০ হতে ১২ ঘণ্টা টেবিল-চেয়ারে বসে টানা কাজ করেন। মাঝে ২ হতে ৩ বার উঠে ঘুরে আসেন। তবে তাতে পিঠ-কোমরের ব্যথায় আরাম পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে বসে থাকতে গিয়ে মেরুদণ্ডের বড় কোনও সমস্যাও হয়ে যেতে পারে। তবে এই সমস্যার সমাধান রয়েছে একটি যোগাসনে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে যোগের কোনও বিকল্পও নেই। সঠিক আসনে একাধিক শারীরিক সমস্যার সুরাহা পাওয়া যেতে পারে। এই বিষয়ে যোগ প্রশিক্ষকরা বলেছেন, নিয়মিতভাবে বীরভদ্রাসন অভ্যাস করতে পারলে এই ধরনের ব্যথায় আরাম পাবেন।
ঘাড় ও কাঁধের পেশি মজবুত করার পাশাপাশি দেহের কাঠামোর গঠন ঠিক করতেও সাহায্য করতে পারে এই বীরভদ্রাসন। দেহ ও মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই আসনটি। বুক, কোমর এবং পায়ের স্ট্রেচ করতে অভ্যাস করতে পারেন এই আসন।
কীভাবে করবেন এই আসন?
# প্রথমে দুই পা দু’দিকে পর্যাপ্ত ব্যবধানে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
# এরপর দু’হাত কান বরাবর উপরের দিকে তুলে নমস্কারের ভঙ্গিতে দাঁড়াতে হবে।
# হাত যেনো একদম সোজা এবং আকাশের দিকে মুখ করা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
# তারপর কোমর থেকে দেহের উপরিভাগ এক দিকে ঘুরিয়ে নিতে হবে।
# যেদিকে ঘুরছেন, সেই দিকের হাঁটু ধীরে ধীরে ভাঁজ করতে হবে।
# পিছনের পা এবং শরীর সোজা রেখে উপরের দিকে তাকাতে হবে।
# এরপর ২০ সেকেন্ড স্থির হয়ে থেকে ২০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিতে হবে, এরপর একইভাবে অপরদিকে আবার করুন ২০ সেকেন্ডের জন্য।
বীরভদ্রাসনের নানাবিধ উপকার থাকলেও এই আসন সকলের জন্য কিন্তু নয়। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, তারা এই ব্যায়াম করবেন না। আবার যাদের কোমর, নিতম্ব, হাঁটু কিংবা গোড়ালির অস্থিসন্ধির সমস্যা থাকলে এই ব্যায়ামটি করা নিষিদ্ধ। গর্ভাবস্থাতেও এই আসন করতে বারণ রয়েছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org