দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘নো সুগার ডায়েট’ করতে হলে খাওয়া-দাওয়ায় কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। কম সময়ে রোগা হতে চাইলে কোনখাবারগুলো খেতে হবে রইলো সেই টিপস।
রোগা হতে চাইলে জীবন থেকে অনেক কিছুই বাদ দিতে হবে। চিনি যার মধ্যে অন্যতম। চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলেই ওজন কমানো অনেক সহজ হয়। পুষ্টিবিদরাও একই মত দিয়ে থাকেন। শরীরচর্চা থেকে বিরত থাকা, ঘুমের ঘাটতি হওয়া, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা এমনকি মানসিক চাপ- ওজন বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে এই কারণগুলো ছাড়াও অত্যাধিক চিনি খাওয়ার অভ্যাসও রয়েছে। তাই ওজন ঝরানোর পর্বে প্রথমে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেন অনেকেই। মিষ্টি, চকোলেট তো নয়ই, এমনকি চায়ে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেন। ইদানীং ‘নো সুগার ডায়েট’ বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া মানেই যে ডায়েট সফল হয়েছে, তা নয়। এমন অনেক খাবারই রয়েছে যেগুলোতে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি। এই ধরনের ডায়েট করলে সেই রকম খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। আবার কিছু খাবার ডায়েটের মেনুতে রাখলে রোগা হওয়াও সহজ হবে। কোন খাবারগুলোর মাধ্যমে শরীরে চিনি প্রবেশ করতে পারে তা কী আপনি জানেন?
প্রক্রিয়াজাত খাবার
কুকিজ, ক্যান্ডি, চিপ্স নো সুগার ডায়েটে থাকলে না খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ হলো এই খাবারগুলোতে ভরপুর পরিমাণে চিনি থাকে। হয়তো সরাসরি চিনি খাচ্ছেন না, কিন্তু চিনিসমৃদ্ধ এই খাবারগুলো খাচ্ছেন, তাতে কোনও লাভই হবে না।
শর্করাজাতীয় খাবার
টমেটো সস্, বার্বিকিউ সস্, স্যালাড ড্রেসিং-এর মতো কিছু খাবারে ঠাসা রয়েছে শর্করায়। চিনি খাওয়া বন্ধ করলে এগুলো খাওয়াও ছাড়তে হবে। নয়তো চিনি না খাওয়ার কোনও সুফলই পাবেন না।
ড্রাই ফ্রুটস
শরীরের জন্য ড্রাই ফ্রুটস উপকারী হলেও ডায়েটের পর্বে এগুলো না রাখলে ভালো হবে। কারণ হলো ওজন বৃদ্ধি করতে ড্রাই ফ্রুটসই যথেষ্ট। কিশমিশ ও খেজুরের মতো কিছু ড্রাই ফ্রুটসে চিনি রয়েছে ভরপুর পরিমাণ। নো সুগার ডায়েট করলে এগুলোও এড়িয়ে চলাটা জরুরি।
তাহলে কোন খাবার খাবেন?
প্রোটিন
চিকেন, মাছ, টোফু হলো প্রোটিনের সমৃদ্ধ খাবার। চিনি খাওয়া বন্ধ করলেও এই খাবারগুলো খান আরও বেশি করে। কম সময়ে ওজন ঝরাতে চাইলে প্রোটিনের ভূমিকা অনবদ্য। যতো বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার আপনি খাবেন, ওজন কমানো ততোই সহজ হয়ে যাবে।
বাদাম
কাঠবাদাম, চিয়া বীজ, আখরোট, তিসির বীজে চিনির পরিমাণ তলানিতে থাকে। সুগার নেই বললেই চলে। উপরন্তু এতে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবারের মতো স্বাস্থ্যকর কিছু উপাদানও। এই উপাদানগুলো শরীরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। আবার শরীরও চাঙ্গা রাখে।
সবুজ শাক-সব্জি
বেশ কিছু শাক-সব্জি রয়েছে যেমন পালং শাক, ব্রকোলিতে শর্করা কম থাকে। এছাড়াও এই সব্জিগুলোতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে। আয়রণ ও ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ সব্জিগুলো ওজন কমাতেও সাহায্য করবে। সহজেই ওজনও বাড়তে দেবে না এইসব সব্জি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org