দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই মনে করেন, ভাতঘুম ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। যে কারণে হজমের সমস্যাও শুরু হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খাওয়া-দাওয়ার পর ভাতঘুম দেওয়ার অভ্যাস ভালো। এজন্য শরীরের ঠিক কী কী লাভ হয় তা জেনে নিন।
দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর কোথা থেকে যেনো চোখে একরাশ ঘুম চলে আসে। অফিস করার সময় অবশ্য ঘুমোনোর সুযোগ থাকে না। তবে বাড়িতে থাকলে ঘুম আটকায় কার সাধ্যি আছে! বাঙালির কাছে ভাতঘুমের একটা কদরও রয়েছে। শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি রক্তে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণ করতে শুরু করে দেয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও ইনসুলিনের আরও একটি কাজও রয়েছে। ইনসুলিনের প্রভাবে ‘ট্রিপটোফ্যান অ্যামাইনো অ্যাসিড’ মস্তিষ্কে ‘সেরোটোনিন’কে আরও সক্রিয় করে তোলে। সেরোটনিন হলো এক প্রকার নিউরোট্রান্সমিটার। যা স্নায়ুর উপরে কাজ করে। সেরাটোনিনের প্রভাবে তাই ভাত খেলে ঘুম পায়। তবে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘুমোনো কী আদৌ ঠিক? না-কি এর কোনও ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে? অনেকের ধারণা যে, ভাতঘুম ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। যে কারণে হজমের সমস্যা শুরু হয়। খাওয়া-দাওয়ার পর ভাতঘুম দেওয়ার অভ্যাস ভালো। জেনে নিন এর কারণে ঠিক কী কী লাভ হয় শরীরের?
# বেশ কিছু গবেষণায় দেখা যায়, ঘুম কম হলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ আরও বেড়ে যেতে পারে। এই হরমোন মূলত স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত। এর প্রভাবে মানসিক চাপও গ্রাস করতে পারে। খাওয়ার পর ঘুম পেলে তা না আটকানোই উত্তম। এতে মন এবং মস্তিষ্ক দুই-ই স্থির ও শান্তও থাকে। মানসিক চাপও কমে যায়। মনোযোগ বাড়ে।
# এই অভ্যাস শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে থাইরয়েড, পিসিওডি এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
# আবার হজমের সমস্যা থেকে রেহাই পেতেও ভাতঘুম দিতে পারেন। পেট পরিষ্কার থাকলে পাকা চুল, ব্রণের মতো সমস্যাও তখন দূর হয়।
# যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্যও ভাতঘুম খুব উপকারী।
# ভাতঘুমের কারণে হজম ভালো হয়। হজম ভালো হলে বিপাকক্রিয়াও বাড়ে- যে কারণে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই ওজন কমাতে হলে ভাতঘুমের অভ্যাস করা উত্তম। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org