দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ও শারীরিক সুবিধা-অসুবিধা বুঝে ব্যক্তিবিশেষে প্রতিদিন ৬০ হতে ১৩০ গ্রাম পর্যন্ত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া যেতে পারে। তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ খাবারের তালিকায় এমন পরিবর্তন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বিশেষ করে যারা ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে শরীরচর্চা করেন, তাদের চোখে কার্বোহাইড্রেট খলনায়কের মতোই। অল্প সময়ের মধ্যে মেদ ঝরাতে শরীরচর্চার পাশাপাশি, প্রতিদিনের ডায়েট থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে দেন অনেকেই। যে কারণে ভাত-রুটি, মিষ্টি, সবই বন্ধ থাকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে শরীরে কার্বোহাইড্রেট না গেলে, তা শরীরে জন্য ভালো না-ও হতে পারে।
পুষ্টিবিদরা বলেছেন, সমস্ত শারীরবৃত্তীয় পরিচালনার জন্য প্রতিদিন শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুযায়ী প্রোটিন, ভিটামিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেটের মতো জরুরি কিছু উপাদানগুলোর জোগান দিতে হবে। বয়স ও শারীরিক সুবিধা-অসুবিধা বুঝে ব্যক্তিবিশেষে প্রতিদিন ৬০ থেকে ১৩০ গ্রাম পর্যন্ত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া যেতে পারে। তবে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়া, হঠাৎ খাবারের তালিকায় এমন ধরনের পরিবর্তন শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলেও মনে করেন চিকিৎসকরা।
ওজন কমানোর জন্য খাবারের তালিকা থেকে কার্বোবাইড্রেট বাদ দিলে শরীর ও মনের উপর কেমন ধরনের প্রভাব পড়তে পারে?
# যেমন ঘুম থেকে ওঠার পর মাথা ধরে থাকে। একবার ভেবে দেখুন শরীরে শর্করার অভাব হচ্ছে না তো? কারণ হলো, মস্তিষ্ক তার সব কাজই পরিচালনা করার জন্য শর্করার উপরেই কিন্তু নির্ভর করে। শুধু তাই নয়, শরীরে সেরেটোনিন হরমোন ক্ষরণেও সহায়তা করে এই কার্বোহাইড্রেট। তাই কার্বের ভাঁড়ারে টান পড়লেও মনখারাপ কিংবা হঠাৎ উদ্বেগ আরও বাড়তে পারে।
# যে কোনও কাজ করতে গেলেই যে শক্তির খরচ হয়, তার বেশির ভাগ আসে কার্বোহাইড্রেট থেকেই। তবে খাবারের তালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলেও শরীর সেই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে পারে না। যে কারণে কায়িক পরিশ্রম করতে গেলে শরীর অতিরিক্ত দুর্বল মনে হয়।
# সাধারণত ডায়েট করা শুরু করলে অনেকেই প্রথম দিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে পারেন। তালিকা থেকে কার্ব ও ফাইবারজাতীয় খাবার বাদ দেওয়ার কারণে এই সমস্যা হতে পারে।
# কার্বোহাইড্রেট একেবার ছেড়ে দিলে ঘন ঘন খিদে পেতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্বোহাইড্রেট কিন্তু অপরিহার্য। কার্বোহাইড্রেটের অভাবে রক্তে শর্করার মাত্রাও তখন কমে যেতে পারে। যে কারণে গ্লুকোজের অন্যান্য উৎস যেমন চিনি কিংবা মিষ্টি খাওয়ার প্রতি টান আরও বাড়ে।
# কার্বোহাইড্রেট খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিলে অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়তে পারে। শরীরে কার্বোহাইড্রেট না গেলে হরমোনের ভারসাম্য তখন বিগড়ে যায়। সে কারণে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়ে অনেক সময়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org