দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সেটি বেড়ে যাওয়ার উপসর্গগুলোকেও চেনা অত্যন্ত জরুরি। নইলে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সাধারণত, শরীরের বেশ কিছু লক্ষণের প্রতি সজাগ থাকলে এই অসুখ সম্পর্কেও সচেতন হওয়া সম্ভব।
ডায়াবেটিস শরীরে বাসা বাঁধার অর্থই হলো জীবনে চলে আসে একের পর এক নানা বিধি-নিষেধ। একটু অনিয়ম হলেই এই রোগের হাত ধরে ধুঁকি বাড়ে আরও হাজার ধরনের রোগের, ক্ষতি হয় বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরও। সাধারণত ডায়াবেটিস দানা বাঁধলে প্রথম অবস্থাতে বোঝায় যায় না। রক্তপরীক্ষা করিয়ে তা বুঝে নিতে অনেকটাই সময় পেরিয়ে যায়। যে কোনও ক্রনিক অসুখের ক্ষেত্রে যতো আগে অসুখের উপস্থিতি বুঝতে পারবেন, ততোই মঙ্গল।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে তা বেড়ে যাওয়ার উপসর্গগুলিকেও চেনা অত্যন্ত জরুরি। কোন কোন উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হবেন আপনি?
# শীতের আমেজেও অতিরিক্ত পানি তেষ্টায় জিভ শুকিয়ে আসতে থাকে ঘন ঘন? এতোটাই প্রবল হয়ে ওঠে এই সমস্যা যে, রাতেও বার বার ঘুম ভাঙে পানির প্রয়োজনে? শরীরে হঠাৎ করে এই সমস্যা দেখলে তা হতে পারে ডায়াবেটিসের লক্ষণ। এই অসুখে শরীরের কোষ হতে ফ্লুইড নেয় কিডনি। যে কারণে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা যায়।
# ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এর প্রভাবও পড়ে দৃষ্টিশক্তিতে। ঘোলাটে দেখা কিংবা কোনও লেখার লাইন ভুল দেখেন কিংবা ভুল পড়ার সমস্যা তৈরি হলেও সচেতন হতে হবে।
# সাধারণত রক্তের অতিরিক্ত শর্করা বের করে দেওয়ার জন্য শারীরিক প্রক্তিয়া কিডনিতে চাপ দেয়। যে কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই ঘন ঘন প্রস্রাব পেতে পারে। তখন ঘন ঘন প্রস্রাবও পায়। রক্তে শর্করা বে়ড়ে যাওয়ার কারণে ইস্ট সংক্রমণের ঝুঁকিও তখন বাড়ে।
# হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা এবং সেইসঙ্গে তা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে ডায়াবেটিস দানা বাঁধলেও এমনটি হয়।
# ব্যায়াম বা শরীরচর্চা না করেও আপনার ওজন হ্রাস পেয়েছে অনেকটা। আবার অনেকের ক্ষেত্রে অত্যাধিক ওজনও বেড়ে যায় অনেক সময়। তাই হঠাৎ করে ওজন হ্রাস পেলে কিংবা বৃদ্ধি পেলে সতর্ক হতে হবে। আপনার শরীরের কোনও অংশে ঘা শুকোতে দেরি হচ্ছে? তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org