দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স বাড়লে অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হলো হাঁটুর ব্যথা। এটি শর্করা বৃদ্ধির কারণে হতে পারে। ওষুধ, পরিমিত খাবার ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি হাঁটাহাটি করাটাও কষ্টের। তখন ভরসা রাখতে পারে কয়েকটি যোগাসনের উপর।
শরীরে এক বার ডায়াবেটিস বাসা বাঁধলে আর কিন্তু রক্ষে নেই। ‘খাল কেটে কুমির আনার মতো’ই শরীরে একাধিক জটিল রোগ ডেকে আনে এই রোগটি। তবে ওষুধ, পরিমিত খাবার ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। জিমে যাওয়ার সময় না হোক, প্রতিদিন নিয়ম করে দু’বেলা হাঁটতে বলেন চিকিৎসকরা। তবে হাঁটুর ব্যথার জ্বালায় জিম তো দূর, বেশিক্ষণ হাঁটতেও পারেন না। সেই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস বশে থাকবে কীভাবে? চিকিৎসকরা মনে করেন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যতম অস্ত্র হতে পারে এই যোগাসন।
বৃক্ষাসন
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। তারপর নিজের দু’টি হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে আনুন। এরপর শরীরের ভারসাম্য রেখে নিজের ডান পায়ের হাঁটু ভাজ করে পায়ের পাতাটি আপনার বাঁ পায়ের ঊরুর উপর আনুন। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড সোজা রেখে নিজের হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে সমানভাবে মাথার উপর নিয়ে আসুন। এরপর ৩০ সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকুন। আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন এবং পা বদল করে নিয়ে পুনরায় এটি করুন।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমেই মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাতের তালু মেঝের উপর ভর দিয়ে পাঁজরের ঠিক দুই পাশে রাখুন। তারপর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে তুলুন। তারপর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসুন। প্রথম দিকে এই আসন ৩ বার করুন। পরবর্তীতে ৫-৬ বারও করতে পারেন।
তাড়াসন
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। পায়ের পাতার মধ্যে ২ ইঞ্চি দূরত্ব রাখুন। তারপর শ্বাস নিন। হাত দু’টোকে উপরে তুলে কাঁধের সমান সমানভাবে নিয়ে যান। এবার আঙুল দিয়ে হাত দু’টোকে জড়ান। হাতের তালু রাখুন ঠিক বাইরের দিকে। এখন শ্বাস নিতে নিতে মাথার উপর হাত দু’টো নিয়ে যান। এরপর পায়ের গোড়ালিগুলো মাটি থেকে উপরের দিকে তুলুন। পায়ের পাতার উপর আপনার শরীরের ভারসাম্য রাখুন। এই অবস্থায় ৩ হতে ১০ বার শ্বাস নিতে হবে। এখন গোড়ালি নীচের দিকে নিয়ে আসুন। শ্বাস ছেড়ে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসুন। অন্তত দু’বার করতে পারেন এই ব্যায়ামটি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org