দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবনে সফলকাম হওয়ার জন্য উচ্চতা কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। সেটি আবারও প্রমাণ করলেন ভারতীয় তরুণ গণেশ বারাইয়া। ৩ ফুট উচ্চতার ভারতীয় এই তরুণ চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। -খবর এএনআইয়ের।
ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী গণেশ আর দশজনের মতোই সুস্থ–স্বাভাবিক হলেও তার উচ্চতা খুবই কম, মাত্র ৩ ফুট। উচ্চতাই তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করেছেন এই মেধাবী তরুণ।
কয়েক বছর আগে তিনি যখন এমবিবিএসে ভর্তির জন্য আবেদন করেন, তখন উচ্চতাকে কারণ দেখিয়ে তা খারিজ করে দেয় ভারতের মেডিকেল কাউন্সিল। তবে নিজের লক্ষ্য থেকে সরে আসেননি এই তরুণ। সাহায্যের জন্য ছুটে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে। জেলা কালেক্টর এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্ত হন গণেশ।
তাদের পরামর্শে মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন গুজরাট হাইকোর্টে। তবে রায় তার পক্ষে আসেনি। এতেও দমেননি গণেশ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়। যে কারণে বাধা কেটে যায় এবং প্রথম সাফল্য পান গণেশ।
এর পরের বছরেই সরকারি একটি কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি হন গণেশ। বর্তমানে গুজরাটের ভাবনগর শহরের স্যার টি হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গণেশ।
গণেশ বর্তমানে প্রতিদিনই মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। উচ্চতা নিয়ে তেমন কোনো সমস্যার মুখেও পড়তে হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
গণেশ বলেন, ‘যখনই কোনো রোগী আমাকে দেখেন- প্রথমেই একটু চমকে যান। এরপর অবশ্য তারা আমাকে স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করেন। আমিও তাদের প্রথমে কনফিউজ হয়ে যাওয়াটাকে মেনে নিই। তারা আমার সঙ্গে বেশ ভালো এবং ইতিবাচক আচরণও করেন। চিকিৎসা পেয়ে খুশিও হন রোগীরা।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org