দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ভারতে কার্যকর করা হলো সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। গতকাল সোমবার (১১ মার্চ) দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আগামী মে মাসে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগেই ভারত সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর করলো।
উল্লেখ্য, ২০১৯ এর নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাসের পর হতেই দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। এমনকি দাঙ্গাও বাঁধে দিল্লিতে। ২০২০ সালেও ওই সিএএ বিরোধী ঝড় অব্যাহত থাকে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, বাংলায় কিছুতেই তিনি সিএএ চালু করতে দেবেন না। মোদী সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন যে, ‘সাহস থাকলে (সিএএ) আগে করতেন। লোকসভা ভোটের আগেই করতে হলো কেনো?
সোমবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন যে, নির্বাচন এলে কিছু একটা খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ওরা। আমার কথা হলো, ২০২০ সালে সিএএ পাশ হয়েছিল। এরপর চার বছর লেগে গেলো! আজ নির্বাচনের দু-তিন দিন আগে সিএএ চালু করার প্রয়োজন পড়রো? এটা আসলে রাজনৈতিক পরিকল্পনা।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে আইনটি পাস করেছিলো। বিতর্কিত এই আইনটি ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়। এই আইন অনুযায়ী, মুসলমান ছাড়া সব ধর্মের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ভারতের প্রতিবেশী আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে বসবাসকারী অ-মুসলিমদের (হিন্দু, শিখ, জৈন ও বৌদ্ধ) ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এমনটিই জানিয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে মুসলমান ছাড়া অন্য সবাই যাতে অবিলম্বে আবেদন করতে পারেন, সেই আমন্ত্রণবার্তাও দেওয়া হয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
সিএএ কার্যকর করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেই টালবাহানা চলছিল। অপরদিকে, করোনা পর্বের আগে থেকেই দেশটির নানা প্রান্তে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। সারাদেশে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে প্রাণ যায় প্রায় ১০০ জন মানুষের। বিজেপি বিরোধী দলগুলোই এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলো। পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলো ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকরের বিরোধী। এ পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। তার আগেই গোটা দেশে চালু হয়ে গেলো এই সিএএ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org