দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে পরমাণুকেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা করেছে ২০৩৫ সালের মধ্যে। রাশিয়ার মহাকাশ প্রধান এই তথ্য জানিয়েছেন। চীনের সঙ্গে যৌথভাবে চাঁদের মাটিতে পরমাণুকেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র রসকসমস-এর প্রধান এই তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
২০৩৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রসকসমস-এর প্রধান ইউরি বরিসভ জানিয়েছেন যে, তারা চাঁদে একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে চাইছেন। চাঁদে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। তবে আমেরিকার আশঙ্কা, এক নতুন পদ্ধতির পরমাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। যে অস্ত্র স্যাটেলাইট ধ্বংস করার কাজে হয়তো ব্যবহার করা হবে।
বরিসভ অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, চাঁদের মাটিতে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনায় তাদের নেই। রাশিয়া ও চীনের যৌথ মহাকাশ গবেষণা ২০২১ সালের জুন মাসে চীন ও রাশিয়া একটি চুক্তি করে। সেখানে ঠিক হয় যে, দুই দেশকে একে অপরকে মহাকাশ গবেষণায় সাহায্য করবে ও যৌথ প্রকল্পে অংশও নেবে।
চীন নিজের মহাকাশ গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা মহাকাশে চ্যাং-ই ৬ স্বয়ংক্রিয় যান পাঠাবে বলে জানা যায়। চাঁদের মাটি থেকে পাথরের নমুনা সংগ্রহ করবে এই যানটি। মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসা’ও দীর্ঘদিন ধরে চাঁদে পরমাণু শক্তি উৎপাদন নিয়ে পরিকল্পনা করে আসছে।
মূলত, অ্যাপোলো ১২ চাঁদে অবতরণের পর একটি পরমাণু জেনারেটর থেকে সেখানে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। গবেষণার কাজে ওই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত সৌরবিদ্যুতের সাহায্যেই চাঁদে যাবতীয় গবেষণার কাজ হয়ে থাকে। তবে ১৪ দিন চাঁদে চন্দ্ররাত থাকে। সেই সময় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করাও সম্ভব হয় না। রাশিয়ার বক্তব্য হলো, তাদের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই সমস্যারও সমাধান করবে। তথ্যসূত্র : ডয়েচে ভেলে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org