দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মঙ্গল গ্রহ এমন একটি গ্রহ যা পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধান বা মানুষের বসবাসের জন্য ভবিষতে উপযোগি হতে পারে এমন বিষয়গুলো উঠে আসে। আর এই ক্ষেত্রে প্রথমেই যে গ্রহটির নাম আসে তা হলো মঙ্গল গ্রহ।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, আজ থেকে ৩৫০ কোটি বছর পূর্বে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল ছিল অত্যন্ত পুরু। এখনকার থেকে তাপমাত্রাও ছিল অনেকটা কম। মাটির বুক চিরে বয়ে যেতো পানির ধারা।
এমনকি মঙ্গলের উত্তরে ছিল কয়েকশো মিটার গভীর, যা আস্ত একটি মহাসাগর। সৌরঝড়ের প্রকোপে সেই পানির ভাণ্ডার বিলীন হয়ে যায় বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারই কিছু অবশিষ্টাংশ বর্তমানে চোখে পড়ে মঙ্গলের মেরু অঞ্চলটিতে। মঙ্গলের মাটির নিচে বরফের আস্তরণ হিসেবে বর্তমানে অবস্থান করছে এই পানি। অর্থাৎ, মাটির নিচে বরফ অবস্থায় রয়েছে পুরো একটা মহাসাগর পরিমাণ পানি!
পৃথিবীর মতো প্রাণধারণের উপযোগী গ্রহ হতে মঙ্গল বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাল কী করে, সেটি নির্ধারণে, প্রযুক্তির সাহায্যে মঙ্গলের আগের মানচিত্র তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা।
তবে পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলের ভূ-প্রকৃতি জটিল বলে মত বিজ্ঞানীদের কারও কারও। তাদের দাবি হলো, পৃথিবীতে সাধারণত পানি এবং খনিজের মধ্যে বিক্রিয়া থেকেই কাদা তৈরি হয়ে থাকে। তা থেকে অন্য খনিজ উৎপন্ন হয়। আবার পানি এবং আয়রণ কিংবা ম্যাগনেসিয়ামের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটলে পানি শুকিয়ে লবণ পড়ে থাকে। তবে মঙ্গলের বুকে এমন লবণও রয়েছে, যা কাদার ঢের আগেই তৈরি হয়ে যায়।
শুধু তা-ই নয়, মঙ্গলের বুকে পানির অস্তিত্ব দীর্ঘকালীন ছিল নাকি সেটি ক্ষণস্থায়ী, বিলীন হয়ে গিয়ে আবারও পানির আবির্ভাব ঘটে কি-না, তা জানতেও চালানো হচ্ছে গবেষণা। মঙ্গলকে নিরীক্ষণ করতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি যে মার্স এক্সপ্রেস মহাকাশযান ব্যবহার করা হয়, তাতে বসানো ওমেগা যন্ত্রই মঙ্গলের ভূ-প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের। আর বিজ্ঞানীরা সেইসব তথ্য যাচাই করে দেখছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org