দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিত্য ব্যবহার্য জিনিস রয়েছে, যা ভাগ করে নিলেও আপনার স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। কোন কোন দ্রব্যের ক্ষেত্রে এই সব সতর্কতা অবলম্বন না করলে বিপদে পড়তে পারেন সেটি আজ জেনে নিন।
আপনাদের সম্পর্ক যতোই মধুর হোক না কেনো, এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা কখনওই ভাগ করা যাবে না প্রিয়জনের সঙ্গে। তোয়ালে-গামছা, অন্তর্বাস, ব্রাশ, জামাকাপড় এইসব জিনিস অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যে কতোটা অস্বাস্থ্যকর, তা প্রায় সকলেই জানেন। তবে এর বাইরেও নানা রকমের ব্যবহার্য জিনিস রয়েছে, যা ভাগ করে নিলেও আপনার স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। প্রত্যেকের শরীরের ধরনই পৃথক হয়ে থাকে। শরীরে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাসের সংক্রমণের কায়দাও কিন্তু পৃথক, তাই অসুখবিসুখে পড়ার প্রবণতাও ভিন্ন থাকে। সেই কারণেই বেশ কিছু জিনিস ভাগ করে নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই সতর্ক হোন। কী কী দ্রব্যের ক্ষেত্রে এইসব সতর্কতা অবলম্বন না করলে বিপদে পড়তে পারে, সেটি আজ জেনে নিন।
হেডফোন
আমরা অনেক সময় নিজের হেডফোনের ভাগ দেয় অন্যকে? বন্ধু বা সহকর্মীর হোডফোনটা নিয়ে নিজের কাজটুকু সেরে নিয়ে থাকি। এক হেডফোনে দু’জনেই গান শুনছেন- এমন দৃশ্যও দেখা যায় হর-হামেশা। চিকিৎসকদের মতে, এইসব জিনিসগুলো শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তাই এগুলো একেবারে নিজেরটা ব্যবহার করাই উচিত। কানের অসুখ ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এক জনের কানে থাকা ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া এই হেডফোনের মারফত অন্যের কানে পৌঁছে যেতে পারে, যে কারণে রোগ ছড়াতে সময়ই লাগে না।
জুতো
জামা-কাপড়, মোজার মতো জুতোটাও পৃথক রাখুন। সব সময় চোখে দেখা না গেলেও পায়ের তলা কমবেশি সকলের ঘামে। সেই ঘাম জুতোতেও ছড়াতে পারে। ঘামে থাকা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া এবং ছত্রাক এড়িয়ে চলতে অন্যের জুতো না পরাই উত্তম।
মেকআপ
লিপস্টিকই হোক কিংবা লিপগ্লস, যে সব সাজের সরঞ্জাম সরাসরি ত্বকে লাগান সেটি অন্য কাওকে ভাগ দেবেন না। এতে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা ওবাড়ে। সাবান এবং ত্বকে সরাসরি ঘষেন এমন পারফিউমও আলাদা করে রাখতে পারলে ভালো হয়। ত্বক এবং রোমকূপের মধ্যে জমে থাকা ব্যাকটিরিয়া এবং শরীরের ভাইরাস অনেকাংশেই এইসব জিনিসের মাধ্যমে সঞ্চারিত হতে পারে।
সিগারেট
এমনিতেও ধূমপান করা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর, তার উপর অন্যের থেকে ভাগ নিয়ে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের মধ্যে, সেই স্বভাব অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর একটি বিষয়।
চিরুনি
অনেক সময় মাথার ত্বকেও ঘাম বসে নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধে। অন্যের চিরুনি ব্যবহার করলে সেই ব্যাক্টেরিয়া আপনার মাথাতেও বাসা বাঁধতেই পারে। তাই অন্যের চিরুনি ব্যবহারের আগে অবশ্যই আপনাকে সতর্ক হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org