দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ফিলিস্তিন দখলদার ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের ওপর নিষোধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমন খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন যে, ‘সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে এর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আমি লড়াই করবো।
সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে যে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দেশের সেনাবাহিনীর ওপর যে কোনো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ আউটলেট অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ‘নেতজাহ ইহুদা ব্যাটালিয়নের’ ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
অন্তত ৩টি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার পূর্বে ওয়েস্ট ব্যাংকের ঘটনার উপর ভিত্তি করে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউনিটটিকে ২০২২ সালে ওয়েস্ট ব্যাংক থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযোগ উঠেছে আইডিএফ ও পুলিশের একাধিক ইউনিটের বিরুদ্ধেও। তাদের আচরণের বিস্তারিত মূল্যায়নের পর নিষেধাজ্ঞার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আক্সিওস জানিয়েছে, অন্য ইউনিটগুলোকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কারণ তারা আচরণে বদল ঘটিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৯৭ সালের ‘লেহি আইন’ অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে। এই আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বিদেশি নিরাপত্তা ও সামরিক ইউনিটগুলোর ক্ষেত্রে বিদেশি সহায়তা এবং প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায়।
এদিকে ইসরাইলের জন্য সহায়তা অনুমোদনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে তাদের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্সি। মার্কিনী সহায়তার নিন্দা করে তারা জানায় যে, এরফলে সহিংসতা আরও বেড়ে যাবে।
মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে শনিবার পাস হওয়া একটি আইনে ইউক্রেন এবং তাইওয়ানের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সমর্থন প্যাকেজটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট এই আইনের বিরুদ্ধেও ভোট দেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org