দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজ ট্রাজেডির সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক জিনিস এখন সোনার চেয়েও অনেক দামী। যা প্রায়ই রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে। এবার রেকর্ড দাম ১৬ কোটি টাকায় বিক্রি হলো টাইটানিক জাহাজের সবচেয়ে ধনী যাত্রীর কাছে থাকা সোনার ঘড়িটি!
গত ২৭ এপ্রিল ইংল্যান্ডে ঘড়িটি নিলামে তোলা হয়েছিলো বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, হেনরি অ্যালড্রিজ অ্যান্ড সন নামে একটি সংস্থা ঘড়িটি নিলামে তুলেছিলো। সেখানে ঘড়িটি ১১ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ডে (১৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার) বিক্রি হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৬ কোটি টাকার সমান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ব্যক্তি ঘড়িটি কিনে নিয়েছেন। নিলামকারী সংস্থা জানিয়েছে যে, টাইটানিক ট্রাজেডির সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো জিনিসের বিক্রয়মূল্যের ক্ষেত্রে এটি একটা রেকর্ড।
ওই ঘড়িটির মালিক ছিলেন মার্কিন ধনকুবের জন জ্যাকব অ্যাস্টর। একশত বছরের বেশি আগে ১৯১২ সালে একটি বিশাল বরফ খণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যখন টাইটানিক জাহাজ ডুবে গিয়েছিলো, তখন বহু যাত্রীর সঙ্গে তিনিও মারা যান। ওই সময় অ্যাস্টর ছিলেন বিশ্বের অন্যতম একজন শীর্ষ ধনী।
অ্যাস্টরের কাহিনী টাইটানিক সিনেমার প্রধান দুই চরিত্র জ্যাক ও রোজের মতোই। দুর্ঘটনার সময় জাহাজে স্ত্রী ম্যাডেলিনও তার সঙ্গেই ছিলেন। তবে তার স্ত্রীকে একটি লাইফবোটে তুলে দিয়েছিলেন অ্যাস্টর। যে কারণে প্রাণে বেঁচে যান ম্যাডেলিন। তবে প্রাণে বাঁচতে পারেননি ধনকুবের অ্যাস্টর।
ওই সময় অর্থাৎ জাহাজ ডুবে যাওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর অ্যাস্টরের লাশ উদ্ধার করা হয়। সেই সময় তার কাছে পাওয়া বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে সোনার এই ঘড়িটিও ছিল।
নিলাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, উদ্ধারের পর ঘড়িটি অ্যাস্টরের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে সেটি মেরামত করার পর ব্যবহার করতেন অ্যাস্টরের ছেলে।
হেনরি অ্যালড্রিজ অ্যান্ড সনের ধারণা ছিল যে, নিলামে হয়তো এক থেকে দেড় লাখ পাউন্ড দাম উঠতে পারে এই সোনার ঘড়িটির। তবে তাদের সেই প্রত্যাশা ছাপিয়ে সেটি প্রায় ১০ গুণ বেশি দামে বিক্রি হলো!
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org