দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় গত ৭ মাস ধরে চলছে যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই মধ্যস্থতার ভূমিকায় ছিলো মিসর, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি মিসর এই ভূমিকা থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিলো।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত এক সংবাদের প্রতিবাদে এই হুমকি দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এই দেশটি। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয় যে, গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য মিসরের গোয়েন্দা বিভাগ যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্তে ইচ্ছাকৃতভাবেই পরিবর্তন এনে চুক্তির বিকৃতি ঘটায়।
এই দাবির প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তার মাধ্যমে মিসরের সরকারি তথ্য পরিষেবা বিভাগের প্রধান দিয়া রাশওয়ান বলেছেন, ‘মিসরের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টায় সংশয় করা বা একে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হলে তা গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। এমন করা হলে মিসর পুরো সংকট হতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেকে সরিয়ে নিতে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হবে।’
গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিএনএন। হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সংলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩টি সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। সম্প্রতি হামাস যে যুদ্ধবিরতির খসড়া চুক্তিটির প্রতি সমর্থন জানায়, সেটি নাকি মূল চুক্তি নয়। অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসে যেসব শর্ত খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, সেগুলোর মধ্যে কয়েকটির বিকৃতিও ঘটিয়েছেন মিসরীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা, এরপর সেটি হামাসের কাছে পাঠানো হয়।
এদিকে, এই খবর ‘ফাঁস’ হওয়ার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের কর্মকর্তারা মিসরের প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন, দোষারোপ করেছিলেন ও গোটা শান্তি আলোচনা প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো বলেও উল্লেখ করা হয় সিএনএনের প্রতিবেদনে।
এই বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে মার্কিন শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পরিচালক উইলিয়াম বার্নসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিএনএন। তবে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজিই হননি।
শুক্রবারের বার্তায় দিয়া রাশওয়ান আরও বলেন, ‘কতিপয় মহল মিসরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছে। যারা এইসব করছে, তারা জানেই না যে, মিসর এই যুদ্ধে জড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে, নিজের ইচ্ছায় নয়।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
Bengali 
English