দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষ নিয়েছে এবার ইউরোপের আরেকটি দেশ জার্মানি। সারাবিশ্বে যখন গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে ঠিক সেই সময় জার্মানির বেশিরভাগ নাগরিকরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৭ জুন) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। এক জরিপে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের বিপক্ষের চেয়ে পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দেশটির বেশির ভাগ মানুষ। যারমধ্যে ৪০ শতাংশ বাসিন্দা ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবিকেই সমর্থন করেছেন। অপরদিকে ২৭ শতাংশ বাসিন্দা এই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আর ৩৩ শতাংশ বাসিন্দা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।
ইতিপূর্বে গত ২৮ মে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপের তিনটি দেশ। দেশগুলো হলো- নরওয়ে, স্পেন এবং আয়ারল্যান্ড। ইউরোপের এমন স্বীকৃতিকে আরব নেতারাও স্বাগত জানান। অপরদিকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তবে এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসরায়েল। তারা ওইসব দেশ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণাও দেয়।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গর স্তোর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান হওয়া ইসরায়েলের স্বার্থের জন্যই ভালো। এই সময় তিনি বলেন, ‘নরওয়ে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে ২৮ মে। যদি (ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে) স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে কখনই শান্তি আসবে না।’
নরওয়ের ঘোষণার পরই আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তার দেশও শীঘ্রই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে এবং স্পেন ঘোষণা দিচ্ছে যে, আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছি। এই দেশগুলো এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণও করবে।’
এরপর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, তার দেশের মন্ত্রিপরিষদ ২৮ মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবেই স্বীকৃতি দেবে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
এই তিন দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর পরই ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং স্পেনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org