দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ সৃষ্টির পর থেকে সৃষ্টিকর্তার এক নিয়মেই চলছে সব। মানুষের হাত-পা, মুখ-চোখ, নাক সবই একইভাবে সাজানো। কিন্তু এই নিয়মকে বাধ্য হয়েই মাঝে মধ্যে পাল্টাতে হচ্ছে। কপালের উপরে নাক প্রতিস্থাপনের এমনই ঘটনা ঘটেছে চীনে।
সংবাদ মাধ্যম বলেছে, এক ব্যক্তির নাক প্রতিস্থাপনের জন্য ডাক্তাররা এবার তার কপালেই নাক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। নাক প্রতিস্থাপনকারী চীনের ওই ডাক্তার বলেছেন, নাক প্রতিস্থাপন করতে এক ব্যক্তির পাঁজরের অংশবিশেষ তারই কপালের ত্বকের নিচে ঢুকিয়ে নাক তৈরি করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া সফল হলে এটাই হবে এ ধরনের বিশ্বে প্রথম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশন। খবর দৈনিক মানবজমিন।
চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ফুজিয়ান প্রদেশের ফুজিয়ান মেডিকেল ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গুয়াও ঝিহুই ২২ বছর বয়সী এক তরুণের নাক প্রতিস্থাপনের জন্য দীর্ঘ ৯ মাস ধরে এ প্রক্রিয়া চালিয়ে আসছেন। গত সপ্তাহে কপালে বেড়ে ওঠা নাকের ছবিটি চীনের গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সারা বিশ্বেই সেটা নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়ে গেছে।
ডা. গুয়াও প্রথমে কপাল থেকে বেরিয়ে আসা নাকটি কেটে পরে সেটা যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করেছেন। সমপ্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নাক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ব্যক্তিটিকে সহযোগিতা করা। এভাবে বিষয়টি সাড়া ফেলবে সেটা কখনও আশা করিনি। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এর আগে শরীরের অস্থিসন্ধি ব্যবহার করে নাক পুনর্গঠন করেছেন। এছাড়া শরীরের অন্য অংশের স্টেম সেল থেকে নতুন করে অঙ্গ তৈরিরও পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তবে কপালে নতুন করে নাকের মতো অঙ্গ তৈরি করার ঘটনা এটাই প্রথম।
ডা. গুয়াও আরও বলেছেন, ২০১২ সালের আগস্টে এক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির নাক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অর্থের কারণে আর সেটার চিকিৎসা করাতে পারেননি। এরপর সেখানে সংক্রমণের ফলে নাকের অস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসকরা পরে পরীক্ষা করে দেখেন নাকের যে অংশ বিশেষ সেখানে রয়েছে সেটাতে নতুন করে নাক প্রতিস্থাপন করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই বিকল্প হিসেবে তারা কপালেই নতুন করে একটি নাক তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। কপালে তৈরি হওয়া নাকটি যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের পর প্রথমে কপালের শিরা থেকেই নাকে রক্ত সঞ্চালন করা হবে। পরে নাকের জন্য নতুন রক্তশিরা তৈরি করার পর অপারেশনের মাধ্যমে পরে কপাল থেকে নাকে রক্ত প্রবাহ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এভাবে বিকল্প নাকের কাহিনী শোনা গেলো ডা: গুয়াও এর কাছ থেকে। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে অপকটে সব খুলে বললেন। তিনি মনে করেন, ইচ্ছে করলে অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়।