দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সারাদেশে গতকাল (বুধবার) রাতে বাসা-বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়েছে। তবে অনেক স্থানেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে নেট কাজ করেনি। অনেক স্থানে এসেই আবার চলে গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড সেবা চালুর পূর্বে ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন টেলিকম এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ৫ দিন পর মঙ্গলবার রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়। যদিও কিছু কিছু স্থানে কাজ করলেও কিছু কিছু লাইন বন্ধই ছিলো। তবে এই সময় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়।
সরকারের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার সেদিন মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে আগুন দেওয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কের ওপর থাকা ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তার। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি ডেটা সেন্টার। সেই কারণে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় বলে টেলিকম এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানান।
৫ দিন পর অচলাবস্থার অবসানের আগাম খবর দিয়ে মঙ্গলবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে টেলিকম এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষমূলক ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি ফিরে আনছি। কেও যেনো মিথ্যা গুজবে বিভ্রান্ত না হন। মূল ধারার গণমাধ্যম যেভাবে লড়াই করছে। তাদের সংবাদগুলোকে যেনো জনগণ প্রাধান্য দেয়, গ্রহণ করে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালুর ক্ষেত্রে কোন কোন খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে পলক বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর, বাণিজ্যিক অঞ্চল, গণমাধ্যম, কূটনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, আইটি ফ্রিল্যান্সার, আউটসোর্সিং বিজনেস, সফটওয়্যার ডেভেলপার, রপ্তানিকারক তাদেরকে প্রাধান্য দিয়েই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যতো দ্রুত সম্ভব ইন্টারনেট চালু হচ্ছে। তারপর মঙ্গলবার রাত ৯টার পর হতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ফিরতে শুরু করলেও অধিকাংশ বাসাবাড়িতে এখনও ইন্টারনেট সেবা চালু হয়নি।
এদিকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) জানিয়েছে যে, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে ৫ দিনে সফটওয়্যার খাতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকার ওপর।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org