দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই সময়টিতে অনেক বাচ্চাই জ্বরে ভুগছে। এতে ভয় পাচ্ছেন বাবা-মায়েরা। তবে এই নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। বরং এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়লে ছোট্ট সোনামনিকে তার ডায়েটে জুড়ে দিন এই নিবন্ধে উল্লেখিত কিছু খাবার। তাতে সে দ্রুত সমস্যা কাটিয়ে সুস্থ-সবল জীবনে ফিরতে পারবে।
বর্ষার এই সময় বাড়বাড়ন্ত হয়ে থাকে কিছু জীবাণুর। এইসব জীবাণুর ফাঁদে পড়লে পিছু নিতে পারে জ্বর। বিশেষত: বড়দের তুলনায় ছোটরাই এমন ধরনের সমস্যায় পড়ে বেশি কষ্ট পায়।
একটি বিষয় হলো সন্তানের শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে খুব বেশি ঘাবড়ে যাবেন না। বরং শান্ত মাথায় সবার প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তিনি যে ওষুধ খাওয়াতে বলবেন সেগুলো খাওয়ান। সেইসঙ্গে সন্তানের ডায়েটে জায়গা করে দিন এই নিবন্ধে উল্লেখিত কয়েকটি খাবারও। এই কাজটি করলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেরে উঠবে সন্তান।
তাহলে কোন কোন খাবার রয়েছে এই তালিকায়? এইসব খাবারকে তার ডায়েটে জায়গা করে দিন। তাহলেই সন্তানের শরীরের হাল ফিরবে।
চিকেন সুপই সেরা অস্ত্র
শিশুরা চিকেন খেতে খুব ভালোবাসে। তাই বলে এই সময় তাকে মুরগির মাংসের মুখোরোচক ঝোল খাওয়ালে চলবে না। বরং তাকে চিকেন সুপ করে খাওয়াতে হবে। এতেই তার শরীরে পৌঁছে যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ। তাই এখন থেকে সন্তানের জ্বর এলেই তাকে চিকেন সুপ খাওয়ান।
ডাবের পানি মহৌষধি
জ্বর এলেই সন্তানকে প্রতিদিন একটা করে ডাবের পানি খাওয়াতে ভুলবেন না! কারণ হলো, এই সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। সেইসঙ্গে বিগড়ে যায় ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্যও। তাই ছোট্ট সোনার জ্বর এলে তাকে ডাবের পানি খাওয়াতেই হবে। এতে করে তার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হবে। সেইসঙ্গে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্যও ফিরবে।
মধু
যুগের পর যুগ ধরে মধু সেবনে উপকারীর কথা আমরা শুনে আসছি। কারণ হলো, এর আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। যার কারণে মধু খেলে শরীরে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ার খেল খতম হয়ে যাবে। শুধু তা-ই নয়, এই মিষ্টির গুণে বাড়ে ইমিউনিটিও। যে কারণে ভাইরাস নিধনেও পাওয়া যাবে সাহায্য। সেই কারণেই জ্বর এলেই এবার থেকে সন্তানকে এক চামচ মধু খাওয়ান।
ওটস
জ্বর হলে শরীরে এনার্জির ঘাটতি হতেই পারে। সেই সুবাদে পিছু নিতে পারে দুর্বলতাও। তবে এই সমস্যার সমাধানে তাকে প্রতিদিন ওটস খাওয়াতে পারেন। তাতে উপকার পাবেন।
ডিম
বর্তমান সময়ে কম পয়সার সেরার সেরা ও সহজলভ্য ভেজালহীন একটি খাবার হলো ডিম। এই খাবারটিতে রয়েছে প্রোটিনের ভাণ্ডার। যে কারণে ডিম খেলেই বাড়ে ইমিউনিটি। শুধু তা-ই নয়, এই খাবার হলো ভিটামিন এবং খনিজের ভাণ্ডার। এমনকী ডিম খুব সহজপাচ্যও বটে! সেই সুবাদেই বিশেষজ্ঞরা ডিমের এত প্রশংসা করে থাকেন।
তবে একটি বিষয় হলো, এই সময় তাকে ডিমের পোচ কিংবা ডিমের অমলেট খাওয়াবেন না। তার বদলে ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে তারপর খাওয়ান। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org