দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি যদি মা সুস্থ থাকেন এবং অপুষ্টিতে না ভোগেন, তাহলে সন্তান জন্মের পর, প্রায় এক বছর পর্যন্ত ৪০০-৬০০ মিলিলিটার মাতৃদুগ্ধ তৈরি হয়ে থাকে। তাই স্তন্যদাত্রী মায়েদের ডায়েট কেমন হবে তা জেনে রাখাটা দরকার।
আমরা সবাই জানি মাতৃদুগ্ধের বিকল্প নেই। নবজাতকের পুষ্টি, বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য যাবতীয় প্রয়োজন মায়ের দুধ থেকেই পাওয়া যায়। শিশু জন্মের পর, প্রথম যে হলুদ বর্ণের গাঢ় দুধ নিঃসৃত হয়, তাকে ‘কলোস্ট্রাম’ বা শালদুধ বলা হয়। ‘কলোস্ট্রাম’ নবজাতকের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি জিনিস। কারণ হলো, এতে পুষ্টিগুণ ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের উপাদানও থাকে, যা নবজাতককে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ হতে মুক্ত রাখে।
যদি মা সুস্থ থাকেন এবং অপুষ্টিতে না ভোগেন, তাহলে সন্তান জন্মের পর, প্রায় এক বছর পর্যন্ত ৪০০-৬০০ মিলিলিটার মাতৃদুগ্ধ তৈরি হয়। শিশুদের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য প্রায় ১০০ কিলোক্যালরি শক্তির দরকার হয়। প্রতি ১০০ মিলিলিটার মাতৃদুগ্ধে ৭০ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যাবে। সন্তানের পুষ্টির জন্য মাতৃদুগ্ধের উৎপাদন কমে গেলে কিন্তু চলবে না। তাই যেসব মায়েরা স্তন্যপান করাচ্ছেন, তাদের এই ধরনের খাবার খেতে হবে, যাতে মাতৃদুগ্ধের উৎপাদন আরও বাড়ে। সন্তান তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।
স্তন্যদাত্রী মায়েরা কী খাবেন
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর পরামর্শ হলো, মায়েদের সবুজ শাক-সব্জি বেশি করে খেতে হবে। পালং শাক, ব্রকোলি এই সময় খুবই উপকারী। যে কোনও খাবার খেতে হবে মশলা ছাড়া। তেল যতো কম খাওয়া যায়, ততোই ভালো। শম্পা বলেছেন, স্তন্যদাত্রী মায়েরা প্রাতরাশে ওট্সও খেতে পারেন। সঙ্গে রাখতে পারেন ড্রাই ফ্রুটস। সব্জি দিয়ে হালকা স্যুপ খাওয়া যেতে পারে।
স্তন্যদাত্রী মাকে নিয়ম করে পানি খেতে হবে। দিনে অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার লিটার পানি খাওয়াটা জরুরি। যদি কোনও সাপ্লিমেন্ট খেতেই হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যে সকল মায়ের শারীরিক কোনও রকম অসুবিধা নেই, তারা দিনে এক চামচ করে ঘি’ও খেতে পারেন। তাতে বেশ কাজ হয়। সেইসঙ্গে খেতে হবে ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবার। এই সময় দুধ, পনির খেতে পারেন মায়েরা। সাবু খাওয়াও এই সময় খুবই উপকারী।
ডাল, নানা রকম বীজ এবং বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চিয়া বীজ, তিসি ও কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। তবে প্রচুর চিনি দেওয়া ফলের রস কিংবা প্যাকেটবন্দি ফলের রস না খাওয়ায় ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org