দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছাত্র বিক্ষোভ এবং গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে হাসিনার সরকার পতনের পর ভারতে কেও কেও বলেন হিন্দুদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। হিন্দুরা ভারতে পালিয়ে আসছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী বললেন- শেখ হাসিনার পতনের পর একজন হিন্দুও ভারত আসেনি।
হাসিনা সরকার পতনের পর জনগণের রোষানলে পড়েন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই সময় সংখ্যালঘুদের কয়েকটি বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং গুজবও ছড়ানো হয়।
ভারতীয় মিডিয়াতেও পুরনো দৃশ্য দেখিয়ে মিথ্যা দাবি করা হচ্ছিল। সেইসঙ্গে উসকানিমূলক বক্তব্যও দেন রাজনৈতিক নেতারা।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক খবরে বলা হয়, শনিবার (২৪ আগস্ট) ভারতে বাংলাদেশি হিন্দুদের প্রবেশ নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা।
তিনি ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশ হতে একজন হিন্দুও ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেনি।
তার ভাষায়, বাংলাদেশের হিন্দুরা সেখানেই বসবাস করছেন। গত এক মাসে একজন হিন্দু’ও ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেছে বলে ধরা পড়েনি।’
হিমান্ত দাবি করে বলেন, তবে গত এক মাসে ৩৫ জন মুসলিম অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের লক্ষ্য আসলে আসাম নয়, বরং বেঙ্গালুরু, তামিলনাড়ু, কোয়েম্বাটুরে গিয়ে বস্ত্র শিল্পে কাজ করার উদ্দেশে তারা অনুপ্রবেশ করতে চাইছিলো।
এই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় বলেও জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org