দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লিভার হচ্ছে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এই লিভার থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে চাইলে ডায়েটে বদল আনাটা জরুরি। এতে করে ফিরবে শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল।
মানব শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি হলো লিভার। মূলত এই অঙ্গটি দেহ থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়। সেইসঙ্গে হজমেও করে সাহায্য। তাছাড়াও একাধিক জরুরি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই লিভার। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে এই অঙ্গের স্বাস্থ্যের দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।
তবে মুশকিলের বিষয় হলো, আমাদের ভুলেভরা খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই অঙ্গের বেজে যাচ্ছে বারোটা। এতে করে জমছে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান। যে কারণে সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। তাই বিপদ বাড়ার পূর্বেই এই অঙ্গ হতে ক্ষতিকর সব উপাদান বের করে দিতে হবে। সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করবে এই নিবন্ধে উল্লেখিত কয়েকটি খাবার। তাই যতো দ্রুত সম্ভব এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত খাবার সম্পর্কে জেনে নিন।
সবুজ শাক
বাজারে শাকের কোনও অভাব নেই। বলা যায় আমাদের পরিচিত সব শাকই পুষ্টিগুণে সেরার সেরা। এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজের ভাণ্ডার। যে কারণে শাক খেলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতিও মিটে যায়। শুধু তা-ই নয়, এই উদ্ভিজ্জ খাবারে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণে ফিরতে পারে শরীরের হাল। এমনকি লিভার থেকে ক্ষতিকর সব উপাদানও বেরিয়ে যায়। সেইসঙ্গে এড়িয়ে চলা যায় একাধিক রোগের ফাঁদ। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই শাককে স্থান করে দিতে হবে।
ক্রসিফেরাস ভেজিটেবল
আপনি নিজেও জানলে অবাক হয়ে যাবেন, ব্রকোলি, বাঁধাকপি ও ফুলকপির মতো ক্রসিফেরাস সবজিই হলো স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর। এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার। সেইসঙ্গে এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারের খোঁজ পাওয়া যায়। যে কারণে এই সব সবজি খেলে সুস্থ থাকে শরীর। শুধু তা-ই নয়, এগুলোতে উপস্থিত গ্লুটাথিওন নামক উপাদান লিভার হতে ক্ষতিকর সব উপাদান বের করে দেওয়ার কাজেও একাই একশো। তাই বিশেষজ্ঞরা সকলকে নিয়মিত এই ধরনের সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ফ্যাটি ফিশ
মাছে ভাতে বাঙালি! এতে শরীরের উপকারও হয়। কারণ হলো, মাছে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন। এতে উপস্থিত প্রোটিন খুব সহজেই শরীর গ্রহণ করে। যে কারণে বাড়ে পেশিশক্তি। সেইসঙ্গে আরও একাধিক উপকার পাওয়া যায়। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণে লিভারের প্রদাহও কমে। সেইসঙ্গে এই অঙ্গে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যায়। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই ফ্যাটি ফিশকে জায়গা করে দিতে পারেন।
রসুন
অতি পরিচিত রসুনের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এতে উপস্থিত অ্যালিসিন নামক উপাদান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে লিভারকেও সুস্থ রাখে। এই অঙ্গকে ডিটক্স করতেও সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত এই ভেষজ সেবন করলে দূরে থাকবে একাধিক জটিল-কুটিল অসুখ। তাই আপনারা প্রতিদিন রসুন খান। কাঁচা খেতে না পারলে পানি দিয়ে গিলে নিন। এতেও হাতেনাতে উপকার পাবেন বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
বেরি জাতীয় ফল
ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরির মতো বেরি জাতীয় বিদেশি ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান লিভারের হালও ফেরায়। দূরে রাখে একাধিক জটিল অসুখ। তাই নিয়মিতভাবে এই ধরনের ফল খেতে পারেন। তবে এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org