দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রচলিত একটি খাবার হলো চিকেন। তবে অনেকেই মনে করেন মুরগির মাংস খেলেও নাকি গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হয়! এই কথার কী আদতেও কোনও যুক্তি রয়েছে? বিষয়টি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ।
অনেকেই মুরগির মাংস খেতে ভীষণ ভালোবাসেন। তাই তারা নিয়মিত এই মাংস খেয়ে করেন রসনাতৃপ্তি। তবে সাধারণ জনগণের এহেন চিকেন প্রীতিকে একবারেই ভালো চোখে দেখেন না বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, নিয়মিত চিকেন খেলে নাকি গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। এই কথা শুনে মহা বিপদে পড়েছেন চিকেন প্রেমীরা। তারা বুঝতেই পারছেন না, এই কথার আদতেও কোনও বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি রয়েছে নাকি নেই? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই যোগাযোগ করা হয় কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদারের সঙ্গে। তিনি কী বলেছেন?
প্রোটিনের খনি
মুরগির মাংসে রয়েছে প্রোটিনের ভাণ্ডার। এতে উপস্থিত প্রোটিন খুব সহজেই শরীর গ্রহণ করে নেয়। যে কারণে বাড়ে পেশিশক্তি। সক্রিয় হয়ে ওঠে ইমিউনিটি। শুধু তা-ই নয়, এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, কোলিন, জিঙ্ক, আয়রণ, কপারের মতো জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ। এই সব উপাদান শরীরের হাল ফেরাতেও সাহায্য করে। দূরে রাখে নানা জটিল অসুখ। তাই ডায়েটে অবশ্যই মুরগির মাংস রাখতে হবে।
গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হতে পারে?
এই প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মজুমদার বলেছেন, ‘মুরগির মাংস হলো অত্যন্ত সহজপাচ্য একটি খাবার। এই খাবার হজম করতে কোনো রকম বেগ পেতে হয় না। তাই যে কোনও মানুষ নিয়মিত এই খাবার খেতে পারেন। তবে অনেকেই মুরগির মাংসের তেল, মশলাদার খাবার খেতেও ভালোবাসেন। অনেকেই এই ভুলটি করেন বলেই শরীরের হাল বিগড়ে যায়। আর তখন এই সহজপাচ্য খাবারও হজম হতে চায় না। উল্টো গ্যাস বা অ্যাসিডিটি পিছু নিতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এমনভাবে চিকেন রান্না করে না খাওয়ার।’
কীভাবে বানাবেন?
সুস্থ থাকতে চাইলে বাড়িতে অল্প পরিমাণ তেল, মশলা দিয়ে এর ঝোল করে খেতে হবে। সেইসঙ্গে নিয়মিত চিকেন স্টু বানিয়েও নিতে পারেন। এতে ভালো পরিমাণে সবজি দিন। নিজে যে ধরনের সবজি খেতে পছন্দ করেন, তাই দিন। তা হলে প্রোটিনের পাশাপাশি একাধিক ভিটামিন এবং খনিজও পাবেন। এছাড়াও চাইলে প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারেন চিকেন স্যালাড। তাতে সমস্যাকে অনায়াসে বশেও আনতে পারবেন। এড়িয়ে চলা যাবে বহু সমস্যাও।
কী পরিমাণ খাবেন?
উপকার পেতে হলে দিনে ১৫০ গ্রাম চিকেন খেতে পারেন। তাতে শরীরের হাল ফিরবে। এড়িয়ে চলা যাবে বহু জটিল অসুখের ফাঁদ থেকে। তবে যাদের কিডনির অসুখ রয়েছে, তারা কিন্তু ভুলেও এই মাংস বেশি পরিমাণে খাবেন না। এই ভুলটি করলে উপকার তো পাওয়া যাবেই না, উল্টো শরীরের ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে। তাই আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরই চেষ্টা করুন চিকেন খাওয়ার জন্য। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org