দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘গাট’ নামে একটি মেডিক্যাল পত্রিকায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গবেষকরা প্রায় ৮০ জন অন্ত্রের ক্যান্সারের (কোলন ক্যান্সার) রোগীকে পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
দৈনন্দিন রান্নায় যে তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তার অধিকাংশই কোনও না কোনও শস্যবীজ হতে তৈরি। কেও কেও সূর্যমুখীর বীজের তেল ব্যবহার করেন। কেও সর্ষে কিংবা অনেকটা সর্ষের মতোই দেখতে ক্যানোলা অয়েল ব্যবহার ব্যবহার করেন। কেওবা ব্যবহার করেন ভুট্টা- সয়াবিনের তেল। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, ওই সমস্ত তেল যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে তা কমবয়সিদের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ফ্লোরিডা ও ফ্লোরিডার কয়েকটি প্রথম সারির হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান একত্রে ওই গবেষণাও চালিয়েছে। গবেষণাটির কথা প্রকাশিত হয়েছে ‘গাট’ নামে একটি মেডিক্যাল পত্রিকাতে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকরা প্রায় ৮০ জন অন্ত্রের ক্যান্সারের (কোলন ক্যান্সার) রোগীকে পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষকরা দেখেছেন যে, ওই রোগীদের প্রত্যেকেরই বায়োঅ্যাকটিভ লিপিডের মাত্রাও অত্যন্ত বেশি। যা তৈরি হয় অতি মাত্রায় বীজের তেল খাওয়ার ফলে। এছাড়া ৩০ হতে ৮৫ বছর বয়সি ক্যান্সার রোগীদের শরীর হতে নেওয়া ৮১টি টিউমারের নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। সেই সমস্ত টিউমারেও ক্যান্সার সংক্রমিত টিস্যুতে লিপিডের মাত্রাও ছিল অত্যাধিক।
ইতিপূর্বেও একটি গবেষণায় শস্যবীজ থেকে তৈরি তেল শরীরের ক্ষতি করে বলে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল যে, শরীরে প্রদাহের পরিমাণ অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে ওই ধরনের তেল। তবে সাম্প্রতিক গবেষণাটিতে বলা হয় যে, শরীরে যাওয়ার পর শস্যবীজের তেল যখন ভাঙে, তখন তার থেকেই বায়ো অ্যাকটিভ লিপিড তৈরি হয়, যা অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, শরীরে টিউমারের সঙ্গে লড়াই করার যে স্বাভাবিক ক্ষমতা থাকে, সেই ক্ষমতাকেও তখন কমিয়ে দেয়।
তবে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শস্যবীজের তেল থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির হিসাব পেতে গবেষণা এখনও অব্যাহত রয়েছে। ওই ধরনের তেলে থাকা ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং কী কী ক্ষতি করে, তা জানার চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org