দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, অনিয়ম জীবনযাপনের জেরে শরীরে রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ক্রনিক অসুখের হাত হতে বাঁচতে গেলে দিনের শুরুটা সঠিকভাবেই করা উচিত। সকালবেলা কয়েকটি অভ্যাসকে রপ্ত করে নিন।
দিনের শুরুটা করুন ঠিক এইভাবে
বর্তমান সময় বিশ্বের মানুষ বিভিন্ন মেডিক্যাল সাপোর্টের মাধ্যমে বেশিদিন বাঁচছে। তবে রোগমুক্ত জীবন কাটাচ্ছেনই বা ক’জন? কোনও না কোনও রোগ লেগে রয়েছে। প্রতিদিন একটা হলেও ওষুধ খেতেই হয়। হাজার বার ডাক্তার দেখিয়েও, ওষুধ খেয়েও যেনো সুস্থ থাকা যাচ্ছে না। গলদ রয়েছে আসলে লাইফস্টাইলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনিয়ম জীবনযাপনের জেরে শরীরে রোগের সংখ্যাও বাড়ছে। ক্রনিক অসুখের হাত থেকে বাঁচতে হলে দিনের শুরুটা সঠিকভাবে করা উচিত। সকালবেলা কয়েকটি অভ্যাসকে রপ্ত করে নিন। দেখবেন, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, হার্ট ডিজ়িজ়ের মতো একাধিক শারীরিক সমস্যাও অনেকাংশ এড়াতে পারবেন।
হাইড্রেশন
শরীর ডিহাইড্রেট থাকলে হজমের গণ্ডগোল হতে ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি বাড়তে থাকবে- সেটিই স্বাভাবিক। তাই দিনের শুরুতেই খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি মেটাবলিজমে সাহায্য করে ও সকালবেলাই পেট পরিষ্কার হবে। খালি পেটে পানি খেলে, এটি শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে দেবে।
শরীরচর্চা
অনেকেই কাজ থেকে ফিরেই সন্ধেবেলা জিমে যান। এই ভুল কখনও করবেন না। দিনের শুরুতে শরীরচর্চা করুন। যোগব্যায়াম হোক কিংবা সাইকেল চালানো হোক, সাঁতার কাটা, যে কোনও ধরনের এক্সারসাইজই সকালে করুন। এতে সারাদিন কাজ করার এনার্জি থাকবে। সেইসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
পুষ্টিকর ব্রেকফাস্ট করুন
প্রথমত: সকালের নাস্তা কোনওভাবেই এড়ানো যাবে না। দ্বিতীয়ত: ব্রেকফাস্টে প্রোটিন, ফাইবার এই ধরনের পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। ডালিয়া-ওটসের মতো হোলগ্রেন কিংবা দানাশস্য, ডাল বা পনিরের মতো প্রোটিন রাখুন। এ ছাড়াও পাতে রাখুন তাজা ফল। এগুলো দেহে রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, ওজনকে বশে থাকে, দেহে পুষ্টির ঘাটতি মেটায় ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নতও করে।
মেডিটেশন
শরীরকে ভালো রাখতে মনের যত্ন নিন। দিনের শুরুটা পজ়িটিভির সঙ্গেই শুরু করুন। কয়েক মিনিট মেডিটেশন কিংবা ধ্যান করুন। এতে মানসিক চাপও কমবে। সেইসঙ্গে সারা দিনটা ভালো কাটবে।
দাঁড়ান সূর্যালোকে
অধিকাংশ ভারতীয়দের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি। এই পুষ্টি আবার স্বাস্থ্যের জন্যও অপরিহার্য। তাই ঘুম থেকে উঠেই কিছুক্ষণ রোদে দাঁড়ান। সকালের রোদ দেহে ভিটামিন ডি’র চাহিদা মেটাতেও সাহায্য করে। এই পুষ্টি হাড়কে আরও মজবুত করে, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়ায় আবার মেজাজকেও করে উন্নত। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org