দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আর্থ্রাইটিস, অর্থাৎ বাত যে শিশুদেরও হয়, সে কথা অনেকেই হয়তো জানেন না। তবে সাধারণ বাতের থেকে জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস একটু ভিন্ন।

সাধারণত শিশুদের ছুটে, খেলে, দৌড়ে বেড়ানোরই কথা। তা না করে হঠাৎ শান্ত হয়ে বসে রয়েছে। খেতেও চাইছে না। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে তার। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে কিংবা একটু হাঁটতে গেলেও ঘ্যানঘ্যান করছে সে। প্রথম দিকে এই ধরনের সমস্যাগুলোকে বাবা-মায়েরা খুব একটা পাত্তাই দেন না। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, এ সবই ‘জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস’-এর লক্ষণও হতে পারে।
এই আর্থ্রাইটিস, অর্থাৎ বাত যে শিশুদেরও হয়, সেই কথা অনেকেই জানেনই না। তবে সাধারণ বাতের চেয়ে জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস একটু ভিন্ন। তবে সময় মতো ধরা পড়লে ও সঠিক চিকিৎসা হলে তা সেরেও যায়।
জুভেনাইল আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো আসলে কী রকম?
এক বেসরকারি হাসপাতালের অস্থি বিষয়ক চিকিৎসক তুষার শাহ বলেছেন, “ঘুম থেকে ওঠার পরই অঙ্গ সঞ্চালন করতে না পারা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, ফোলা ভাব, এমনকি জ্বরও হতে পারে। এমন অনেক শিশু রয়েছে যাদের গায়ে র্যাশও বের হয়। আবার দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হলেও অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।”
শীতে জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা পেতে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে?
# শরীর উষ্ণ রাখতে পারে এমন ধরনের খাবার ও পানীয় খাওয়াতে হবে। শিশুদের যাতে চট করে ঠাণ্ডা না লাগে এমন ধরনের পোশাক পরাতে হবে। রাতে ঘুমোনোর পূর্বে অস্থিসন্ধিতে গরম সেঁকও দেওয়া যেতে পারে।
# অনেক সময় বাতের ব্যথায় হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয়। তবে একেবারে অচল হয়ে বসে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে। তার চেয়ে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম, হাঁটাহাটি, সাঁতারের মতো শরীরচর্চা করা যেতেই পারে।
# প্রদাহজনিত ব্যথাবেদনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সমস্যা খানিকটা হলেও বশে রাখা যায়। তাই খাওয়া-দাওয়ার দিকেও নজর দেওয়া দরকার। ভিটামিন ডি রয়েছে এমন খাবার ডায়েটে রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org