দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন চকোলেট কিংবা মিষ্টি খেলেই দাঁতে পোকা ধরতে পারে। তবে দন্ত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চকোলেট খাওয়া যতোটা সমস্যার, তার চেয়েও খাওয়ার পর মুখ না ধোয়া বেশি সমস্যার।

শিশু সর্বক্ষণই বলছে যে, দাঁতে ব্যথা কিংবা মাড়ি শিরশির করছে? দাঁতের ঠিক মতো যত্ন না নিলে স্থায়ী দাঁত তো বটেই, দুধের দাঁতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কষ্ট হতে পারে শিশুর। শিশুর দাঁতের সমস্যা কেনো হচ্ছে, তার অনেকগুলো কারণও থাকতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন চকোলেট কিংবা মিষ্টি খেলেই দাঁতে পোকা ধরতে পারে। তবে দন্ত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চকোলেট খাওয়া যতোটা সমস্যার, তার চেয়েও খাওয়ার পর মুখ না ধোয়া বেশি সমস্যার।
প্রকৃতপক্ষে দাঁতে পোকা বলে কিছুই হয় না। হয় ‘ডেন্টাল ক্যারিস’। বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে দাঁত এবং মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাকে চলতি ভাষায় ‘দাঁতে পোকা’ বলে থাকেন অনেকেই। দাঁতের সমস্যা মূলত দু’রকম হয়ে থাকে- এক. দাঁতের ক্ষয়জনিত রোগ ও দুই মাড়ির সমস্যা। দাঁতের ক্ষয় মূলত মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি সময় ধরে দাঁতে জমে থাকার কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত জমে থাকা খাবারে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, যা দাঁতের উপরের অ্যানামেল অংশের ক্ষতিও করে। যে কারণে দাঁত ক্ষয়েও যেতে শুরু করে। পরে সেটি ক্যাভিটি কিংবা গর্তে পরিণত হয়। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার না করলে, পানি কম খেলে মাড়িতেও সংক্রমণ দেখা দেয়।
শিশুর দাঁতের যত্ন কীভাবে নেবেন
চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানিয়েছেন, দুধের দাঁতের সময় থেকেই দাঁতের যত্ন নেওয়া শুরু করা দরকার। শিশুরা দুধ খেলে মুখের মধ্যে তার অবশেষ রয়েই যায়। সেখান থেকেও দাঁতের ক্ষয় শুরু হতে পারে। তাই প্রতি বার দুধ কিংবা খাবার খাওয়ানোর পর ভালো করে মুখ ধুইয়ে দেওয়া উচিত।
দাঁত ওঠার সময় থেকে সেমি-সলিড খাবারের অভ্যাস করানোর পাশাপাশি বোতলে খাওয়ানো কমানো দরকার বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। যে কারণে দাঁতের গঠন ঠিক থাকবে। দাঁত উঠে গেলে কিছু খাওয়ার পর অল্প করে পানি খাওয়াতে হবে, যাতে করে অবশেষে ধুয়েও যেতে পারে। তাছাড়া দাঁত ভালো রাখতেও শিশুদের খাদ্যতালিকায় চিনি এবং রিফাইন্ড শর্করার পরিমাণ কমাতে হবে।
৫-৬ বছরের পর হতে দুধের দাঁত উঠে গিয়ে যখন স্থায়ী দাঁত উঠতে শুরু করে, সেই সময় আরও বেশি যত্নের দরকার। নরম ব্রাশ দিয়ে দিনে কম করে হলেও দু’বার ব্রাশ করানো উচিত।
আবার শক্ত জিনিস চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করাটাও জরুরি। যে কারণে দাঁতের আশপাশের পেশি শক্ত হয়, দাঁতও ভালো থাকে। তাই ফলের রস না দিয়ে আপেল, শসার মতো ফল টুকরো করে কেটে দিলে শিশুরা তা চিবিয়ে খেতে পারে খুব সহজেই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org