দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেনমার্কের মালিকানাধীন এই দ্বীপটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে উত্তপ্ত ফোনালাপও করেছেন ট্রাম্প।

মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, এই ফোনালাপ চলাকালে ৪৫ মিনিট ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্প মেটে ফ্রেডেরিকসেনকে কথিত ‘হুমকি-ধামকি’ দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের কথা বলার ধরন ছিল রীতিমতো ‘ভয়ঙ্কর’।
মূলত গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি আধা স্বশাসিত দ্বীপ, যা ভূরাজনৈতিকভাবে ডেনমার্কেরই অংশ। যদিও ভৌগোলিকভাবে এটি উত্তর আমেরিকার খুব কাছাকাছি, তবে এটি কখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই উদ্যোগ নিয়ে ডেনমার্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডেনমার্কের পক্ষ হতে সাফ জানানো হয়েছে যে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রি’র প্রশ্নই আসে না। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন একটি পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পূর্ব হতেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে আসছেন যে, তিনি গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করতে চান। তার মতে, বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এতে আরও বলা হয়, গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কথা বলতেই ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ফোনে স্পষ্ট করে দেন গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা তার কাছে অত্যন্ত ‘গুরুত্বপূর্ণ’। তবে ফ্রেডেরিকসেন ট্রাম্পের কথা নাকচ করে দেন। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীও বুঝিয়ে দেন যে, খনিজ সম্পদে ভরা এই দ্বীপটি ‘বিক্রি’ করতে তারা একেবারেই আগ্রহী নন।
ফ্রেডেরিকসেন গ্রিনল্যান্ড ‘বিক্রি’ করতে রাজি না হওয়াতে চটে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগ, ফোনের মধ্যেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ট্রাম্প এবং এক পর্যায়ে তা সংঘাতের পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
ইইউর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে, ফ্রেডেরিকসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আধা স্বশাসিত দ্বীপটিতে সম্পূর্ণভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, ‘(ট্রাম্পের কথা বলায়) কঠোরতা ছিলো। সেগুলো যেনো হিমশীতল ধারার মতোই ছিল। যদিও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী দফতর হতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে ইইউর কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা উড়িয়ে দেওয়া হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org